বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীরা টানা দু’মাসের কর্মবিরতি পালন করে ফেলেছেন। তার পরেও তাতে ইতি টানার লক্ষণ নেই। আরও সাত দিন কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।
১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন-সহ কৌঁসুলিদের তিনটি সংগঠন কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই মামলার পাহাড় জমে যাওয়ায় বিচারপ্রার্থীরা নাকাল হচ্ছিলেন। তার উপরে কৌঁসুলিদের লাগাতার কর্মবিরতির ফলে তাঁদের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্ট এবং কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক যে তৎপরতা চালাচ্ছে, হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি চিঠি দিয়ে তা জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও অচলাবস্থা কাটছে না। কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে এ দিন বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে আইনজীবীদের দাবি।
বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উত্তম মজুমদার নিজেই এ দিন জানান, বুধবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য তাঁকে একটি চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম এবং কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক হাইকোর্টের পর্যাপ্ত বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। শূন্য পদে দ্রুত যাতে বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, সেই চেষ্টা চলছে। অতএব কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক। কারণ, টানা কর্মবিরতির ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা।
এ দিন বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির চিঠিটি সংগঠনের সদস্যদের দেখানো হয়। হাইকোর্ট সূত্রের খবর, বেশির ভাগ সদস্য জানিয়ে দেন, বিচারপতি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারির আগে পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া হবে। কয়েক জন সদস্য প্রস্তাব দেন, আপাতত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হোক। সংগঠনের পরবর্তী সভা ডাকা হোক ২৬ এপ্রিল। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ওই দিন পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে। উত্তমবাবু জানান, বেশির ভাগ সদস্য সেই প্রস্তাবে সায় দেন।
কলাকাতা হাইকোর্টে ৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা। এখন আছেন ৩৩ জন। তাঁদের মধ্যে পালা করে দু’জন বিচারপতি আন্দামানে সার্কিট বেঞ্চে বিচার করতে যান। আগামী কয়েক মাসে কয়েক জন বিচারপতি অবসর নেবেন বলে হাইকোর্ট সূত্রের খবর। তাঁদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিও আছেন।