পঠনপাঠন, গবেষণা, পড়ুয়ারা পাশ করে বেরিয়ে কী করছেন, সমাজের সর্বস্তরের পড়ুয়ার অংশগ্রহণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক (এনআইআরএফ)-এর র্যাঙ্কিং পাওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য এই পাঁচটি বিষয়। এক থেকে একশোর মধ্যে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কোন ক্ষেত্রে কত নম্বর পেয়েছে, কেন্দ্রের তালিকায় তা স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু একশোর পরে যারা রয়েছে, তাদের নম্বর জানানো হয়নি প্রকাশিত ওই তালিকায়।
তাই এই পাঁচটি ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কত পেয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। প্রথম একশোয় প্রেসিডেন্সির না থাকা নিয়ে বিস্মিত অনেকেই।
প্রেসিডেন্সির সমাজতত্ত্বের এমেরিটাস অধ্যাপক প্রশান্ত রায় মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রেসিডেন্সি নতুন, শিক্ষকেরা অধিকাংশই নবীন। গবেষণার কাজ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যতটা হওয়া উচিত, তা এখনও হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘পিএইচডি করার জন্য পড়ুয়ারা নাম নথিভুক্ত করলেও এখনও পিএইচডির ডিগ্রি কেউ পায়নি।’’ প্রেসিডেন্সি সম্পর্কে সাধারণের ধারণাও ভাল নম্বর আনতে পারেনি বলে মত তাঁর।
মূলত গবেষণার ক্ষেত্রেই পিছিয়ে থাকার কথা বুধবার স্বীকার করে নিয়েছেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘মাত্র ৬ বছর বয়সি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৪ সালে পিএইচডি রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নম্বর পেতে আরও ৪-৫ বছর সময় লাগবে।’’ উপাচার্যের দাবি, প্রেসিডেন্সিতে বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলি এবং কলা বিভাগই মূলত পড়ানো হয়। তাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে চাকরির সম্ভাবনা কম। শিক্ষকেরা নবীন এবং অনভিজ্ঞ হওয়ায় নম্বর কমেছে বলে মনে করেন তিনিও।
পূর্বতন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সির বহিরঙ্গেরই চাকচিক্য বেড়েছে। কিন্তু এই ফল বুঝিয়ে দিচ্ছে, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্তঃসারশূন্য হয়ে গিয়েছে।’’ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য প্রেসিডেন্সির একশোর মধ্যে না থাকার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুটা পিছিয়ে যাওয়াকে। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘কলেজ না বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কোন ক্ষেত্রে নাম দিয়েছিল জানি না। কেন এগিয়েছে, কেন পিছিয়েছে, জানি না। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এত হইচই, তারাও তো পিছিয়েছে।’’
স্পষ্টতই শিক্ষামন্ত্রীর লক্ষ্য যাদবপুর। তিনি জানান, গোটা বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইবেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কেন প্রথম দশে নেই, সেই বিষয়েও খোঁজ নেবেন। মান নির্ণয়ের মাপকাঠি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী।