প্রাতরাশ খেয়ে বহু যাত্রী অসুস্থ শতাব্দীতে

ভর্তি হওয়া অসুস্থ যাত্রীদের অধিকাংশ বারুইপুর, বাঘা যতীন ও বীরভূমের বাসিন্দা। পুরীর বিভিন্ন এলাকায় ছিলেন তাঁরা। সকলে আমের রস না-খেলেও প্রত্যেকেই পাউরুটি ও ডিমের অমলেট খেয়েছিলেন বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৮ ০৫:৩৩
Share:

অসুস্থ: খড়্গপুর রেল হাসপাতালে শতাব্দী এক্সপ্রেসের যাত্রী। বুধবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বিভিন্ন ট্রেনে খাবারের মান নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ উঠছিল। এ বার রেলের সরবরাহ করা খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা।

Advertisement

অভিযোগ, বুধবার সকালে প্রাতরাশ খাওয়ার পরেই ওই ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পেটের গোলমালের সঙ্গে সঙ্গে বমি করতে থাকেন অনেকে। অসুস্থ ১৪ জন যাত্রীকে খড়্গপুর ডিভিশনের প্রধান রেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানায়, ডাউন পুরী-হাওড়া শতাব্দীতে খাবার দিয়েছে রেলের নিজস্ব সংস্থা ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড টুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি-র লাইসেন্সপ্রাপ্ত দিল্লির একটি কেটারিং সংস্থা। ওই সংস্থার সরবরাহ করা প্রাতরাশের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

রেল সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ট্রেন ভুবনেশ্বরে পৌঁছলে রেলের প্যান্ট্রিকারের কর্মীরা যাত্রীদের প্রাতরাশ দিয়ে যান। ট্রেন বালেশ্বরে পৌঁছলে সি-২, সি-৩ ও সি-৪ নম্বর কামরার বেশ কিছু যাত্রী বমি করতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে কাতরাতে থাকেন পেটের যন্ত্রণায়। বেলা ১২টা নাগাদ ট্রেন খড়্গপুরে পৌঁছলে রেলের পক্ষ থেকে অসুস্থ যাত্রীদের নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর ডিভিশনে রেলের প্রধান হাসপাতালে। ভর্তি করানো হয় ১৪ জনকে।

Advertisement

ভর্তি হওয়া অসুস্থ যাত্রীদের অধিকাংশ বারুইপুর, বাঘা যতীন ও বীরভূমের বাসিন্দা। পুরীর বিভিন্ন এলাকায় ছিলেন তাঁরা। সকলে আমের রস না-খেলেও প্রত্যেকেই পাউরুটি ও ডিমের অমলেট খেয়েছিলেন বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। বেলা সওয়া ৩টে নাগাদ হাওড়া স্টেশনের ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছয় পুরী শতাব্দী। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাওড়া স্টেশনে যান আইআরসিটিসি-র গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র।

হাওড়ায় নামা যাত্রীদের মধ্যে ট্রেনের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ন’বছরের স্নেহা কর্মকার। তার বাবা দীপঙ্কর কর্মকার বলেন, ‘‘পুরী থেকে ওঠার কিছু পরে আমাদের প্রাতরাশ দেওয়া হয়। তা খাওয়ার কিছু পরেই মেয়ে বমি করতে শুরু করে।’’ হাওড়ায় পৌঁছনোর পরেও অসুস্থ বোধ করছিলেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা তপন সরকার। রেলের চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা করে ওষুধ আর জল দেন। কিছুটা সুস্থ বোধ করার পরে তিনি বলেন, ‘‘প্রাতরাশে দেওয়া ওমলেট খেয়েই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।’’

‘‘খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’’ আশ্বাস দিয়েছেন আইআরসিটিসি-র গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিসবাবু। পুরীর ফিরতি ধরতে আসা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত রেলের পক্ষ থেকে দু’জন সিনিয়র ম্যানেজারকে ওই ট্রেনে পাঠানো হয় খাবারের মান যাচাইয়ের জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন