SIR in West Bengal

এসআইআর নিয়ে জেলাশাসকদের চিঠি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের! কী কী করতে হবে অতিরিক্ত সাত দিনে?

এনুমারেশন ফর্ম আপলোড করার সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ১১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। অর্থাৎ, বিএলও এবং ইআরও-রা আরও এক সপ্তাহ সময় অতিরিক্ত পাচ্ছেন। তাই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের নির্দেশ, ওই সময়কে কাজে লাগিয়ে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল করার চেষ্টা করতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ০০:২৩
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভোটার তালিকার বিশে‌ষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে এ বার জেলাশাসকদের চিঠি পাঠাল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-র দফতর। এনুমারেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যে অতিরিক্ত সাত দিন সময় পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে কী কী কাজ সেরে ফেলতে হবে— সে সব বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হল চিঠিতে।

Advertisement

রবিবারই বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসআইআর-এর প্রক্রিয়ার সময়সীমা সাত দিন করে পিছিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগে বলা হয়েছিল, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এনুমারেশন ফর্ম নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এখন সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। অর্থাৎ, বিএলও এবং ইআরও-রা আরও এক সপ্তাহ সময় অতিরিক্ত পাচ্ছেন। তাই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের নির্দেশ, ওই সময়কে কাজে লাগিয়ে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল করার চেষ্টা করতে হবে। বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-দের কাছে থাকা সমস্ত এনুমারেশন ফর্ম ২ ডিসেম্বরের মধ্যে আপলোড করতে হবে কমিশনের ওয়েবসাইটে। ২ তারিখের পর থেকে যে সব ফর্ম আসবে, সেগুলি সে দিনই আপলোড করে ফেলতে হবে। জমা পড়ে থাকা কোনও এনুমারেশন ফর্ম ২ ডিসেম্বরের পরে আর গ্রহণ করা হবে না। ১১ ডিসেম্বরের পর যদি কোনও বাড়ি থেকে ফর্ম জমা নেওয়া হয়, তা হলে অ্যাপে সেগুলিকে ‘আনকালেক্টেবল’ বা অসংগ্রহযোগ্য হিসাবে দেখানো হবে।

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, যে হেতু এখন হাতে এক সপ্তাহ বেশি সময় রয়েছে, তাই এই অতিরিক্ত সময়ে যাবতীয় তথ্য পুনরায় যাচাই করতে হবে বিএলও-দের। বিএলও অ্যাপে করা প্রতিটি এন্ট্রি আবার ফর্মের হার্ডকপির সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। যে ফর্মগুলি কোনও সংস্থা বা অন্য ব্যক্তি পূরণ করেছেন, সেগুলি বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। যাচাইকারী হিসাবে দায়বদ্ধ থাকবেন বিএলও–রাই। কাজে কোনও রকম অসাবধানতা বা ভুল হলে সংশ্লিষ্ট বিএলও-র বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

যে সব ক্ষেত্রে ভোটারদের তথ্য পুনরায় যাচাই করে দেখতে হবে, তার একটি তালিকাও দিয়ে দিয়েছে সিইও দফতর।

• যে সব ভোটার দাবি করেছেন তাঁরা নিজেরাই পরিবারের প্রধান, ২০০২ সালে তাঁদের বয়স ৬০ বা তার বেশি ছিল কি না, তা যাচাই করতে হবে।

• ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় শুধুমাত্র বাবা বা মায়ের নাম রয়েছে, এমন কোনও ভোটারের বয়স যদি ২০২৫ সালে ৫০ বছর বা তার বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে তাঁকে প্রশ্ন করতে হবে, ২০০২ সালে বয়স ২৫ বছর বা তার বেশি হওয়া সত্ত্বেও কেন ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই।

• বিএলও–র ম্যাপ করা বাবা–মায়ের নাম ২০২৫ সালের তালিকার সঙ্গে না মিললে সেই ভোটারের বাড়ি গিয়ে অথবা ফোন করে তা যাচাই করতে হবে।

• বাবা–মায়ের সঙ্গে সন্তানের বয়সের ফারাক ৪৫ বছরের বেশি অথবা ১৮ বছরের কম হলে সেগুলি ভাল করে যাচাই করতে হবে।

• পরিবারের অনুপস্থিত সদস্যের হয়ে অন্য কেউ সই করলে বিএলও–কে ফোনে, বাড়িতে গিয়ে বা অন্য ভাবে সেই ভোটারের পরিচয় যাচাই করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে ওই ব্যক্তি অন্য কোনও রাজ্য বা জেলার ভোটার কি না।

• বিএলও–দের অ্যাপে ভুল এন্ট্রি হলে পুনরায় তা সংশোধন করা যাবে। এই কাজে বিএলও–দের উৎসাহিত করবেন ইআরও বা এইআরও-রা।

• ২০২১ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে যে বুথগুলিকে ‘স্পর্শকাতর’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, সেগুলির তথ্য বিশেষ ভাবে যাচাই করতে হবে।

• যে সব বুথে বাবা-মা-সন্তানের ম্যাপিং ৫০ শতাংশ বা তার বেশি, সেগুলির তথ্য ভাল করে যাচাই করতে হবে।

• জন্ম-মৃত্যু তথ্য বা তার রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছ থেকে মৃত ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এ ছাড়া, যে সব মৃতের রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে, সেই তথ্যও নিতে হবে। তার পর সে সব তথ্য যাচাই করে মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে ইআরও-দের। যদি কোনও বিএলও ভুল এন্ট্রি করে থাকেন, তা-ও সংশোধন করতে হবে।

• যে সব বুথে শূন্য থেকে ২০টি 'আনকালেক্টেবল ফর্ম' রয়েছে, অর্থাৎ সমস্ত বা বেশির ভাগ এনুমারেশন ফর্ম পূরণ হয়ে ফেরত এসেছে, সেখানে বিএলও–রা ঠিকমতো এন্ট্রি করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।

এই সব কাজের অগ্রগতি নিয়ে চলতি সপ্তাহেই ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছে সিইও দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement