পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লক-পিছু এক জন পর্যবেক্ষক চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আর রাজ্য সরকারের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, দু’টি ব্লকের জন্য এক জন পর্যবেক্ষকই যথেষ্ট। শেষ পর্যন্ত সরকারের ভাবনাচিন্তা চূড়ান্ত হলে তা কার্যত নজিরবিহীন হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের অনেকেই।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কমিশনের ইচ্ছা অনুযায়ী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লক-পিছু এক জন পর্যবেক্ষক দিতে হলে অন্তত ৩৪১ জন ডব্লিউবিসিএস অফিসার প্রয়োজন। সেই সঙ্গে চাই অতিরিক্তি আরও ১০-১২ জন। সব মিলিয়ে ব্লক পর্যবেক্ষকের সংখ্যা হবে সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি। আর জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে ২৫-৩০ জন আইএএস অফিসার প্রয়োজন। কমিশনের আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রায় ১০০ আইএএস অফিসারের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। সেখান থেকে কমবেশি ২৫ জনকে জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে বেছে নেওয়া হবে। ডব্লিউবিসিএস অফিসারের তালিকাও প্রাথমিক ভাবে প্রস্তুত করেছে প্রশাসন। সেখান থেকেই বাছাই করা হবে ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের।
কিন্তু আধিকারিক শিবিরের একাংশের ধারণা, ব্লক পর্যবেক্ষক হিসেবে শেষ পর্যন্ত হয়তো প্রায় ২০০ বিসিএস অফিসারের নাম কমিশনের কাছে প্রস্তাব করা হবে। সে-ক্ষেত্রে দু’টি ব্লকের জন্য এক জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার পথে হাঁটতে পারে কমিশন। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এমনই কিছু সম্ভাবনা ঘোরাফেরা করলেও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। সেই সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রীই।’’
প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, ২০০৮ এবং ২০১৩ সালের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লক-পিছু এক জন পর্যবেক্ষকই নিয়োগ করা হয়েছিল। এ বার সেই রীতির ব্যতিক্রম হলে তা তাৎপর্যপূর্ণ হবে। আধিকারিক মহলের একাংশের যুক্তি, রাজ্যে অফিসারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলেই হয়তো শেষ পর্যন্ত এমন একটা বন্দোবস্ত করা হতে পারে। তবে একাধিক পর্বে পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে তখন আর ততটা সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা। জনসংখ্যার উপরে নির্ভর করলেও ব্লক-পিছু বুথের সংখ্যা ১৬০-২০০। এখন এক-এক জন পর্যবেক্ষককে দু’টি ব্লকের দায়িত্ব সামলাতে হলে নজরদারিতে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা বহু আধিকারিকের।