মৌসুমি অক্ষরেখা তো ছিলই। তার উপরে বৃহস্পতিবার জুড়েছে বঙ্গোপসাগরের নয়া ঘূর্ণাবর্ত। দুইয়ে মিলেই এ দিন ফের প্রবল বৃষ্টি মহানগর ও লাগোয়া জেলাগুলিতে। দুপুর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে ব্যাহত যান চলাচলও। রাতেও ফের জোরালো বৃষ্টি হয়েছে কিছু কিছু এলাকায়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আজ, শুক্রবার ঘূর্ণাবর্তটি আরও কিছুটা পশ্চিমবঙ্গের দিকে সরে আসতে পারে। তার ফলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সকাল থেকেই এ দিন আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা যাচ্ছিল। বেলা গড়াতেই শুরু হয় বৃষ্টি। তার ফলে রাস্তায় গাড়ির গতি কমে যায়। আমজনতার অভিজ্ঞতা, পরমা এবং এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলের পশ্চিমমুখী গাড়ির গতি বারবার থমকেছে। দুপুরে যানজট তৈরি হয় পরমা উড়ালপুলে। বাইপাসের একাংশেও গাড়ির গতি কম ছিল।
বেলা দুটো নাগাদ শুরু হয় জোর বৃষ্টি। জল জমে যায় বিভিন্ন রাস্তায়। লালবাজার জানায়, দক্ষিণ কলকাতার রডন স্ট্রিট, লাউডন স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, লেক রোড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, রাজডাঙা এলাকায় গোড়ালি ডোবা জল জমেছিল। গোড়ালি ভিজেছে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গাঁধী রোড, মুক্তারামবাবু স্ট্রিটেও। জল ঠেলে এগোতে গিয়ে থমকে গিয়েছে গাড়ির গতি। চাকার জল ছিটকে ভিজিয়ে দিয়েছে পথচারীদের।
এ দিন কসবা থেকে গড়িয়াহাট, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ হয়ে পার্ক সার্কাসের দিকে আসছিলেন বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়। জল ঠেলে আসতে গিয়ে দ্রুত গাড়ি চালাতে পারেননি। লালবাজার সূত্রের দাবি, গোড়ালি ডোবা জলে বেশি সমস্যা হয়নি। সন্ধ্যার পরে বহু এলাকায় জল নেমে যায়। রাতের দিকে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মহানগরের কিছু এলাকায় গা়ড়ির গতি শ্লথ হয়েছে। অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে ভিজতে হয়েছে অনেককে। সন্ধের পরে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়াও বয়েছে।
মহানগর যখন বৃষ্টিতে চুপচুপে, তখন নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসতে বৃষ্টি হয়নি। আবার সন্ধ্যায় কলকাতার সঙ্গেই ভিজেছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদদের একাংশ জানান, কলকাতা ও লাগোয়া এলাকাগুলিতে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছিল। যেখানে মেঘ তৈরি হয়েছে, সেখানেই বৃষ্টি হয়েছে। অন্যত্র হয়নি। আবহবিদেরা বলছেন, আজ, শুক্রবার ঘূর্ণাবর্তটি রাজ্যের দিকে সরে এলে বিস্তৃত এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। হাওয়া অফিসের মতে, চলতি সপ্তাহ বৃষ্টিতে ভিজেই শেষ হবে। ‘‘ঘূর্ণাবর্তটি কী চেহারা নেবে, তা শুক্রবার সকালে আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে,’’ মন্তব্য এক আবহবিজ্ঞানীর।