জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট যেমন নেওয়ার, সে তো নেবেই। তবে ভোটের আগে প্রতিটি কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য শুধু পুলিশ-প্রশাসনের দেওয়া সেই সব তথ্যের উপরেই নির্ভর করতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন। একেবারে নিজস্ব কিছু সূত্রে থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছে তারা।
নিজেদের তথ্যসূত্র ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করার আগে ২০০৯ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনের সামগ্রিক তথ্যও খতিয়ে দেখা হবে। বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতরের এক কর্তা এ কথা জানিয়ে বলেন, “গত এক বছরে রাজ্যের প্রতিটি বুথে যত ধরনের হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তারও আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করবে কমিশন।”
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উপনির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুৎসি ২৫ মার্চ, মঙ্গলবার কলকাতায় আসছেন। তিনি বৈঠকে করবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে। মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা বলবৎ করা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন জুৎসি। জেলাগুলির সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে কোথায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। উপনির্বাচন কমিশনার বৈঠক করবেন স্বীকৃত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও।
নিজেদের সূত্র থেকে তথ্য জোগাড়ের ব্যাপারে কমিশনের উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনীতির কারবারিদের অভিমত। তবে তথ্য পেতে কমিশন কেন নিজেদের সূত্র ব্যবহার করতে চাইছে বা কোন কোন নিজস্ব সূত্র ব্যবহার করছে, তার সবিস্তার ব্যাখ্যা মেলেনি। আগেই অবশ্য জানানো হয়েছে, ভোটর সময় তো বটেই, প্রচার পর্ব থেকেই পুলিশ-পর্যবেক্ষক পাঠাবে কমিশন। এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখাই হবে তাঁদের মূল কাজ।
পশ্চিমবঙ্গের যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী অফিসার শৈবাল গুপ্ত জানান, রাজ্যের প্রতিটি বুথে সশস্ত্র পুলিশ থাকবে। কিন্তু সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া সম্ভব নয়। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব পাবে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত এ দিন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও-সম্মেলন করেন। সেখানে নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোর ভাবে প্রয়োগ করার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার প্রয়োজনে কার কত কেন্দ্রীয় বাহিনী লাগবে, তার প্রাথমিক হিসেবনিকেশ নিয়েও আলোচনা হয়। কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ম ভেঙে মাইক ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে পুলিশের কাছে।