বাংলার জন্য নির্মলাকে মন্ত্রী বাছলেন অমিত

নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পেল বাংলা। এক অভিনব উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আজ নরেন্দ্র মোদী সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হাতে পশ্চিমবঙ্গের ভার তুলে দিলেন। এখন থেকে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের অভাব-অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন নির্মলা। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পরেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে কারওকে পূর্ণমন্ত্রী করা হয়নি। বাবুল সুপ্রিয় প্রতিমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৮
Share:

নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পেল বাংলা।

Advertisement

এক অভিনব উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আজ নরেন্দ্র মোদী সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হাতে পশ্চিমবঙ্গের ভার তুলে দিলেন। এখন থেকে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের অভাব-অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন নির্মলা। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পরেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে কারওকে পূর্ণমন্ত্রী করা হয়নি। বাবুল সুপ্রিয় প্রতিমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের সমস্যাগুলি সম্পর্কে যাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অবগত হয়ে তৎপর হতে পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে ইন্দিরা গাঁধীর আমলে পশ্চিমবঙ্গ বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়কে। ১৯৬৭-তে রাজ্যে যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পরে কেন্দ্র ও কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি যাতে পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন, সেটাই ছিল ইন্দিরার রাজনৈতিক লক্ষ্য। সে কৌশল কাজে লেগেছিল। ১৯৭২-এ কংগ্রেস আবার ক্ষমতায় ফেরে রাজ্যে, এবং মুখ্যমন্ত্রী হন সিদ্ধার্থশঙ্করই। সিদ্ধার্থ ও নির্মলার নিয়োগে অবশ্য কিছুটা তফাৎ রয়েছে। সিদ্ধার্থকে পুরোদস্তুর সরকারি দায়িত্ব দিয়েছিলেন ইন্দিরা। আর অমিত শাহের এই দায়িত্ব বণ্টন একেবারেই দলীয় পর্যায়ের। কিন্তু ইন্দিরার মতো অমিত শাহেরও পাখির চোখ যে বাংলার ক্ষমতা দখল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

নির্মলার মতে, শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবগত। ইতিমধ্যেই তিনি উত্তরবঙ্গের চা-বাগানের সঙ্কট মেটানোর বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ করা শুরু করেছেন। এখন নতুন দায়িত্ব পেয়ে তার পরিধি আরও বাড়ল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, অনেক দিন ধরেই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁরা দাবি জানাচ্ছিলেন, কোনও এক জন মন্ত্রীকে রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হোক। না হলে রাজ্যের ছোট-বড় সমস্যাগুলি নিয়ে কেন্দ্রের কোন মন্ত্রীর কাছে দৌড়তে হবে, তা নিয়ে ধন্দ ছিল। রাহুল হলেন, অমিত শাহ এখন সেই ধন্দ দূর করে দিলেন। নির্মলা সীতারামনের কাছে সমস্যাগুলি তুলে ধরলেই সেটি প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছবে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আরও ছ’টি রাজ্যে এই অভিনব ব্যবস্থা শুরু করছেন অমিত শাহ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নাড্ডাকে অন্ধ্রপ্রদেশ, বিদ্যুৎ ও কয়লা মন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে তামিলনাড়ু, দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডিকে কেরল, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে অসম, বিমান ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মহেশ শর্মাকে ওড়িশা, রসায়ন ও সার প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহিরকে তেলঙ্গানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই মন্ত্রীদের দায়িত্ব হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে বিজেপির সংগঠনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে তাদের অভাব-অভিযোগ শোনা ও সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় করে তার সমাধান খোঁজা।

সামনের বছর পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন। তার আগে গত কাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সূত্রের মতে, যে ঋণ মকুবের দাবি নিয়ে মমতা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরব হয়েছেন, তা মানা যে কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব নয়, তা ভালোই জানেন মুখ্যমন্ত্রী। তবু প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নের জন্য সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তার পরেও রাজ্যে ফিরে গিয়ে মমতা কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিজেপিকেও তার মোকাবিলা করতে হবে। কেন্দ্র রাজ্যকে যা যা সহযোগিতা করেছে, সেগুলিও তুলে ধরা হবে পাল্টা প্রচারে। পাশাপাশি বিজেপির শক্তি বৃদ্ধির জন্য দলের নানা সমস্যার দিকেও নজর দেওয়া যাবে। এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই পশ্চিমবঙ্গের জন্য এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্দিষ্ট করে দেওয়া হল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement