বাংলাদেশের পথে প্রতিনিধিরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ফুলবাড়ি বাণিজ্যপথ দিয়ে উভয় দেশের নাগরিকদের যাতায়াত ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বার সার্কভুক্ত দেশগুলির মধ্যে অভিন্ন মুদ্রা (কমন কারেন্সি) চালুর করার চিন্তাভাবনাও শুরু হল। ওই সীমান্ত পথে বাসিন্দাদের যাতায়াত ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে এসে এ কথাই জানিয়েছেন বাংলাদেশে থাকা ভারত, নেপাল এবং ভূটানের হাই কমিশনাররা। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির উপকন্ঠে ফুলবাড়ি সীমান্ত ঘুরে দেখেন সার্কভুক্ত চারটি দেশের প্রতিনিধিরা। সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ির জেলা শাসক পৃথা সরকার এবং শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক দীপাপ প্রিয়া। সোমবার শিলিগুড়িতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ওই সীমান্ত পথে যাতায়াত ব্যবস্থা চালু নিয়ে বৈঠকে যে সমস্ত প্রস্তাব পাওয়া গিয়েছে তাঁর মধ্যে একই মুদ্রা চালু করার কথাও উঠে এসেছে বলে স্বীকার করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ। তিনি বলেন, “এই ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব আগে থেকেই ছিল। নতুন করে বৈঠকেও আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে শীঘ্রই ঠিক করা হবে।”
এদিন সকাল আটটায় শিলিগুড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়ি সীমান্ত এলাকায় যায় দলটি। তার মধ্যে ভুটানের হাইকমিশনার পেমা চোদেন, নেপালের হাইকমিশনার হরিকুমার শ্রেষ্ঠা-সহ বিদেশ মন্ত্রকের কয়েকজন কর্তা। তাঁরা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। আলাদা করে তাঁরা শুল্ক দফতর, অভিবাসন দফতর এবং সীমা সুরক্ষা বলের কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এরপরে সেখান দিয়েই বাংলাদেশে চলে যান। ওপারে দলটিকে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির ছিলেন বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল। এদিন ভারতীয় হাইকমিশনার শরণ অভিন্ন মুদ্রা চালুর ব্যপারে জোর দেন। বাকি প্রস্তাবের সঙ্গে মুদ্রার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো রিপোর্টে আলাদা করে জোর দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। উত্তরবঙ্গের বিবিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এই বিষয়টি চালুর দাবিতে তাঁদের কাছে জোরালো সওয়াল করেছেন বলে জানান। এই ব্যবস্থা চালু না থাকায় প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভারতের লেনদেনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের সদস্যরা। বিশেষ করে নেপাল ও ভুটানি মুদ্রা ভারতে ভাঙানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় বলে জানানো হয়। ভুটান ও নেপালের সঙ্গে ভারতের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আর পাঁচটা দেশের মত নয়। তাই সে সব দেশের অর্থ ভাঙিয়ে লাভ হয় না বলে দাবি করেন ফোসিনে সম্পাদক বিশ্বজিত দাস। তিনি বলেন, “ভারতের কোনও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র বা ব্যাঙ্কগুলি এই সমস্ত দেশের মুদ্রা ভাঙিয়ে দিতে চায় না। সে কারণে সার্কভুক্ত দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে সাধারণ মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।” এর আগেও প্রণব মুখোপাধ্যায় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যে ‘ইউরো’র ধাঁচে অভিন্ন মুদ্রা চালুর ব্যপারে আলোচনা হয়েছিল বলে বিশ্বজিতবাবু জানান। তবে তখন বিষয়টি বেশি দূর এগোয়নি। এবার নতুন উদ্যোগে আশাবাদী ফোসিন।