সারদা-চুক্তি নিয়ে আইআরসিটিসি এখন ইডি’র মুখে

সিবিআই ইতিমধ্যে করেছে। এ বার সারদা-কেলেঙ্কারির তদন্তে রেল পর্যটন নিগমের (ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন, সংক্ষেপে আইআরসিটিসি) কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডি-সূত্রের খবর, এ কথা জানিয়ে বুধবার নিগমের দফতরে ফ্যাক্স পাঠানো হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার নিগমের কর্তারা ইডি’র অফিসে হাজির হতে পারেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১২
Share:

সিবিআই ইতিমধ্যে করেছে। এ বার সারদা-কেলেঙ্কারির তদন্তে রেল পর্যটন নিগমের (ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন, সংক্ষেপে আইআরসিটিসি) কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডি-সূত্রের খবর, এ কথা জানিয়ে বুধবার নিগমের দফতরে ফ্যাক্স পাঠানো হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার নিগমের কর্তারা ইডি’র অফিসে হাজির হতে পারেন।

Advertisement

আইআরসিটিসি’র গায়েও যে সারদার ছোঁয়া লেগেছে, সারদা-কেলেঙ্কারির সিবিআই-তদন্তের দৌলতে সেই তথ্য প্রথম সামনে আসে। জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই রেল মন্ত্রকের অধীনস্থ নিগমটির সঙ্গে সারদার একটি চুক্তি হয়েছিল। অভিযোগ, ‘ভারততীর্থ’ নামাঙ্কিত আইআরসিটিসি’র ওই ভ্রমণ প্রকল্পের এজেন্ট হিসেবে ‘সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’কে নিযুক্ত করা করা হয়েছিল টেন্ডারের বালাই ছাড়াই। উপরন্তু এ ক্ষেত্রে সারদা গোষ্ঠীর পর্যটন সংস্থাটির কাছ থেকে জামানত (গ্যারান্টি) হিসেবে এক পয়সাও নেওয়া হয়নি। এ হেন অনিয়মের পিছনে বিশেষ কোনও মহলের প্রভাব কাজ করেছিল কিনা, তদন্তকারীরা সেটাই জানতে চান।

সারদা ট্যুরসের ব্যবস্থাপনায় ভারততীর্থ প্রকল্পের তিনটি যাত্রায় আয়োজন হয়েছিল। তাতে বেশ কিছু মানুষ দক্ষিণ ভারত বেড়িয়েও এসেছেন। এবং তদন্তকারীদের অভিযোগ, রেলের ভ্রমণ প্রকল্পের এজেন্ট হিসেবে সারদা ট্যুরসকে নিয়োগের ওই চুক্তি দেখিয়ে সারদা গোষ্ঠী বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছে। এমনকী, আমানতকারীদের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে আইআরসিটিসি’র লোগো-ও ব্যবহার করা হয়েছে নির্বিচারে। “রেল যার উপরে আস্থা রেখেছে, সেই সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আমজনতার সংশয় থাকবে কী করে?” মন্তব্য এক ইডি-কর্তার।

Advertisement

ইডি-সূত্রের খবর: কোম্পানি নিবন্ধকের হিসেব অনুযায়ী ২০১২-র মার্চ থেকে ২০১৩-র মার্চ পর্যম্ত সারদা ট্যুরস বাজার থেকে ১ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা তুলেছে। এক বছরের মধ্যে এত টাকা তোলার পিছনে রেল-চুক্তির কোনও অবদান রয়েছে কি না, ইডি এখন তা খতিয়ে দেখতে চায়। অভিযোগ, সারদার সঙ্গে ‘অনিয়মের’ চুক্তির কথা রেল-কর্তাদের বিলক্ষণ গোচরে ছিল। তবু তখন কোনও ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা তা-ও জানতে আগ্রহী।

বস্তুত সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ‘অনুগ্রহের’ সুবাদেই সারদার সামনে ফলাও কারবারের জমি তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে বেহালার একই বাড়ির ঠিকানায় (৪৫৫ ডায়মন্ড হারবার রোড) সারদার ৪৩টি কোম্পানিকে ট্রেড লাইসেন্স মঞ্জুরির প্রসঙ্গও উঠছে, যেখানে আঙুল খাস পুরভবনের দিকে। ওই ঘটনাটিও এ বার ইডি-তদন্তের আওতায় আসছে। ইডি-সূত্রের দাবি, এ ব্যাপারে কলকাতা পুরসভার দেওয়া তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের বিস্তর অসঙ্গতি। “সে সবের বিশদ ব্যাখ্যা চেয়ে পুর-কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানো হবে।” বলেন এক ইডি-কর্তা।

এ দিকে ব্যবসায়ী রাজারাম শরাফকে এ দিন ফের তলব করেছিল ইডি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের একদা ছায়াসঙ্গী আসিফ খানের বিরুদ্ধে আট কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন রাজারাম, যার ভিত্তিতে আসিফকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর পুলিশ। প্রসঙ্গত, সারদা-তদন্তেও আসিফের নাম জড়িয়েছে, আর তা নিয়ে ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। পাশাপাশি রাজারামের অভিযোগের যৌক্তিকতা নিয়েও মাথা চাড়া দিয়েছে নানা প্রশ্ন। তাই ইডি ওঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ইডি সূত্রের খবর, রাজারামের দেওয়া তথ্যে তদন্তকারীরা আদৌ সন্তুষ্ট নন। তাই তাঁকে ফের ডাকা হবে।

সারদা-তদন্তে আজ মনোরঞ্জনা সিংহকে আবার ডাকা হয়েছে। ইডি এবং সিবিআই আগেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement