আমেরিকায় আটক শিখ বৃদ্ধা হরজিৎ কৌর। — ফাইল চিত্র।
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমেরিকায় বসবাস করছিলেন। ৭৩ বছর বয়সি সেই শিখ মহিলাকে সম্প্রতি আটক করেছে মার্কিন অভিবাসন দফতর (আইসিই)। খবর ছড়িয়ে পড়তেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ক্ষুব্ধ সে দেশের শিখ সম্প্রদায়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃদ্ধার নাম হরজিৎ কৌর। গত ৩০ বছর ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে আমেরিকার উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার ইস্ট বে এলাকায় থাকছিলেন হরজিৎ। কাজ করছিলেন স্থানীয় এক কাপড়ের দোকানে। বর্তমানে আমেরিকায় তাঁর পাঁচ পৌত্র-পৌত্রী এবং অন্য আত্মীয়স্বজনেরা রয়েছেন। এত দিন সব ঠিকঠাকই চলছিল। সমস্যার সূত্রপাত গত সপ্তাহের শুরুতে। গত সোমবার নিয়মমাফিক চেক-ইনের জন্য আইসিই-র সান ফ্রান্সিসকো দফতরে গিয়েছিলেন হরজিৎ। সেখানেই তাঁকে আটক করেন আধিকারিকেরা।
সংবাদমাধ্যম এবিসি৭ নিউজ়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, হরজিতের আমেরিকায় থাকার কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই। সে কারণেই তাঁকে আটক করেছে অভিবাসন দফতর। যদিও বার্কলেসাইড নামে আর এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এত দিন ধরে নিয়মিত আইসিই-র দফতরে হাজিরা দিয়েছেন হরজিৎ। বৃদ্ধার পুত্রবধূ মঞ্জি কৌর জানাচ্ছেন, ১৯৯২ সালে ভারত থেকে দুই পুত্রকে নিয়ে আমেরিকায় গিয়েছিলেন হরজিৎ। ২০১২ সালে তাঁর আমেরিকায় আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু তার পর থেকে গত ১৩ বছর ধরে প্রতি ছ’মাস অন্তর সান ফ্রান্সিসকোর আইসিই-র দফতরে নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছেন তিনি। আইসিই-ও তাঁকে আশ্বস্ত করেছিল যে, প্রয়োজনীয় নথি না মেলা পর্যন্ত তিনি কর্মসংক্রান্ত অনুমতিপত্রের ভিত্তিতেই আমেরিকায় থাকতে পারবেন। কিন্তু সোমবার আচমকা তাঁকে আটক করা হয়।
সেই আবহে গত শুক্রবার হরজিতের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে একটি বিক্ষোভের আয়োজন করেছে তাঁর পরিবার। তাতে যোগ দিয়েছেন শিখ সম্প্রদায়ের বহু সদস্য। ইনডিভিসিবল ওয়েস্ট কন্ট্রা কোস্টা কাউন্টি এবং শিখ সেন্টার-এর প্রতিনিধিরাও ছিলেন সেই বিক্ষোভে। মার্কিন কংগ্রেসম্যান জন গারামেন্ডি, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারাও সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। গারামেন্ডি জানিয়েছেন, তাঁর দফতর থেকে আইসিই-তে তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে। হরজিতকে দ্রুত তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ করা হয়েছে তাতে।