Pakistan-Afghanistan Conflict

‘সংঘাতের নেপথ্যে ভূমিকা নেই ভারতের, আরও নিবিড় হবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক’! পাকিস্তানকে খোঁচা আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াকুব তালিবানের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের পুত্র। ইয়াকুব আফগান তালিবানের অন্দরে ‘পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত ‘হক্কানি নেটওয়ার্কে’র বিরোধী বলে গণ্য।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ২২:০৭
Share:

আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ। ছবি: সংগৃহীত।

পড়শি আফগানিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের জন্য ভারতের দিকে অভিযগোর আঙুল তুলেছে পাকিস্তান। কিন্তু মঙ্গলবার আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ সরাসরি জানিয়ে দিলেন, সাম্প্রতিক রক্তাক্ত সংঘাতের নেপথ্যে নয়াদিল্লির কোনও ভূমিকা নেই। উল্টে পশ্চিম এশিয়ার সংবাদমাধ্যমে আল জাজ়িরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইসলামাবাদকে দুষে তাঁর মন্তব্য, ভারত তাত্ত্বিক ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে বলে পাকিস্তান যে অভিযোগ তুলেছে, তা ভিত্তিহীন।

Advertisement

পাশাপাশি, ভবিষ্যতে নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বার্তা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘কাবুল স্বাধীন ভাবে তার বৈদেশিক সম্পর্ক নির্ধারণ ও পরিচালনা করে। আমরা স্বাধীন জাতি। তাই জাতীয় স্বার্থেই ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর করা হবে।’’ ঘটনাচক্রে, আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াকুব তালিবানের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের পুত্র। ইয়াকুব আফগান তালিবানের অন্দরে ‘পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত ‘হক্কানি নেটওয়ার্কে’র বিরোধী বলে গণ্য। আফগান প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দ, উপ-প্রধানমন্ত্রী মৌলানা বরাদরও রয়েছেন এই গোষ্ঠীতে। আফগান তালিবানের অন্দরে এই গোষ্ঠীই এখন মূল নীতিনির্ধারক।

তালিবানের অন্য গোষ্ঠীর নেতা হলেন আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ সিরাজউদ্দিন হক্কানি। আফগানিস্তানে শরিয়তি বিচারব্যবস্থার প্রধান আব্দুল হাকিম হক্কানি রয়েছেন ওই ‘নেটওয়ার্কে’। বিগত সরকারের জমানায় পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মদতে কাবুলের ভারতীয় দূতাবাসে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে কুখ্যাত ‘হক্কানি নেটওয়ার্কে’র বিরুদ্ধে। বস্তুত, আফগান তালিবানের অন্তরে ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ নেতা হিসেবে পরিচিতি মধ্য ত্রিশের ইয়াকুব। ২০১৩ সালে মার্কিন বিমানহানায় পিতা ওমরের মৃত্যুর পরে প্রথমে নাকি তাঁকেই সংগঠনের নেতা মনোনীত করা হয়েছিল কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে অভিজ্ঞতা কম থাকায় তিনি নিজেই এই পদ থেকে সরে এসেছিলেন। পরিবর্তে সুপারিশ করেছিলেন পিতৃবন্ধু হাইবাতুল্লা আখুন্দজাদার নাম। হাইবাতুল্লা দু’গোষ্ঠীর কাছেই এখনও ‘গ্রহণীয়’ বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমানহানা চালিয়েছিল পাকিস্তান বায়ুসেনা। ১০ অক্টোবর সীমান্ত লাগোয়া পকতিকা প্রদেশের মারঘি এলাকায় একটি বাজারে বিমানহানা চালানো হয়। ঘটনাচক্রে, আফগান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফর শুরুর দিনেই হামলা হয়েছিল কাবুলে। পাক সেনার দাবি, কাবুল এবং পকতিকায় টিটিপির ঘাঁটি ছিল বিমানহানার নিশানা। এর পরে গত সপ্তাহে ধারাবাহিক ভাবে পাক বিমানহানা চলেছে আফগানিস্তানে। ডুরান্ড লাইনে পাক সেনাকে তার ‘জবাব’ দিয়েছে ইয়াকুবের বাহিনীও। কাতারের রাজধানী দোহায় দু’দেশের সাময়িক সংঘর্ষবিরতি চুক্তি হয়েছে। ইসলামাবাদ তার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে কি না, সে বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন ইয়াকুব। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে এ বিষয়ে নজর রাখতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement