পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। আফগানিস্তানের সঙ্গে তাঁদের সরকারের তৃতীয় দফার শান্তিবৈঠকও ভেস্তে গিয়েছে। — ফাইল চিত্র।
নিজেদের দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করারই দায় নিতে চাইছে না পাকিস্তান। সেটির দায়িত্বও আফগানিস্তানের উপর চাপাতে চাইছে ইসলমাবাদ। সেই কারণেই কাবুলের মধ্যে বৈঠক নিষ্ফলা হয়ে রয়ে গিয়েছে। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র।
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পরে দু’দেশই দফায় দফায় আলোচনায় বসেছে। গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তানবুলে তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসেছিল ইসলামাবাদ এবং কাবুল। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। বৈঠক নিষ্ফলা হওয়ার দায় তালিবানের উপর চাপিয়ে ইতিমধ্যে নিজেদের বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তান। এ বার নিজেদের বক্তব্য জানাল কাবুলও। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র জ়াবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, ইসলামাবাদ চাইছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বও আফগানিস্তানের উপর চাপুক। কিন্তু এই দাবি আফগানিস্তানের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। সেই কারণেই শান্তিবৈঠক ভেস্তে গিয়েছে।
পাকিস্তানের আফগান সীমান্তবর্তী খায়বার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় রয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এই তালিবান বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রায়শই সংঘর্ষ লেগে থাকে পাকিস্তানি সেনা এবং আধাসেনা বাহিনীর। অনুমান করা হচ্ছে, ওই তালিবান বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রসঙ্গই উঠে এসেছিল আলোচনায়। যদিও তালিবান সরকারের মুখপাত্র এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তান তা ভাঙেনি। আগামী দিনেও তেমনই চলবে বলে জানিয়েছেন জ়াবিহুল্লাহ।
ইস্তানবুলের শান্তিবৈঠক নিষ্ফলা হওয়ার পরে আফগানিস্তানকে ইতিমধ্যে হুমকি দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ জানিয়েছেন, সংঘর্ষবিরতি তত দিনই চলবে, যত দিন আফগানিস্তানের মাটি থেকে পাকিস্তানে আর কোনও হামলা না-হচ্ছে। যদি আবার হামলা হয়, তবে পাকিস্তান পাল্টা জবাব দেবে। খোয়াজার দাবি, প্রায় সব ক্ষেত্রেই পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান একমত হয়েছিল। কেবল একটি ‘না’ আলোচনা ভেস্তে দিয়েছে। আসিফের কথায়, ‘‘তুরস্ক এবং কাতার আমাদের অবস্থানকে সমর্থন করে। এমনকি, আফগান প্রতিনিধিরাও সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও লিখিত সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে তাঁরা রাজি হননি। সেই কারণেই আলোচনা ভেস্তে গেল। ওঁরা চেয়েছিলেন, মৌখিক সম্মতি গ্রহণযোগ্য হোক। কিন্তু আন্তর্জাতিক কোনও আলোচনায় তা সম্ভব নয়।’’