Protest in Philippines

দুর্নীতি-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল এশিয়ার আরও এক দেশ! প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ

দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল এশিয়ার আরও এক দেশ। সে দেশে সেচ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নেমেছেন বহু মানুষ। প্রেসিডেন্টের ইস্তফার দাবিতেও সুর চড়়িয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২৮
Share:

দুর্নীতি-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল এশিয়ার আরও এক দেশ। ছবি: রয়টার্স।

নেপালের পর এ বার ফিলিপিন্স। দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল এশিয়ার আরও এক দেশ। সে দেশে সেচ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নেমেছেন বহু মানুষ। রবিবার রাজধানী ম্যানিলায় ফিলিপিন্সের জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিক্ষোভকারীরা। প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের ইস্তফাও দাবি করা হয়।

Advertisement

প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। সংবাদ সংস্থা এএফপি-র প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ২০ জন নাবালক। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন অন্তত ৩৯ জন পুলিশ আধিকারিক। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ।

কেন এই বিক্ষোভ

Advertisement

বিশ্বের প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হল ফিলিপিন্স। প্রায়ই সাইক্লোন আছড়ে পড়ে সে দেশে। তার উপর ম্যানিলায় অপরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য অধিকাংশ নদীর প্রবাহপথ সরু হয়ে গিয়েছে। ফলে দেশের নিচু এলাকাগুলি তো বটেই, তুলনায় উঁচু এলাকাগুলির বিস্তীর্ণ অংশও প্রায় জলমগ্ন হয়ে থাকে। ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর ফিলিপিন্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ দুর্যোগ মোকাবিলায় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সরকারি কোষাগার থেকে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৯৫০ কোটি মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা)। এই টাকায় দেশের নানা প্রান্তে জলাধার নির্মাণ, খাল খননের কথা ছিল। গত জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট নিজেই জানান, অধিকাংশ প্রকল্পের মান খুব খারাপ। কোনও কোনও প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করা হলেও বাস্তবে সেগুলির কোনও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হলে সবিস্তার তদন্তের আশ্বাস দেন তিনি। কিন্তু ক্ষোভে ফুঁসছিলেন ফিলিপিন্সের সাধারণ মানুষ। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে রবিবার।

বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন কারা

নেপালের মতো ফিলিপিন্সেও বিক্ষোভের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে সে দেশের ছাত্র-যুবদের। বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন পেশা এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ। বিক্ষোভে যেমন রয়েছে বামপন্থী সংগঠন, তেমনই রয়েছে ক্যাথলিকপন্থী বিশপদের সংগঠনও।

নেপথ্যে কি নেপালের ছায়া

সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে চলতি মাসের শুরুতে ছাত্র-যুবর আন্দোলন শুরু হয় নেপালে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে ৯ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে বেছে নেওয়া হয় সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলাকে। গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন ৭২ বছরের সুশীলা। অনেকেই মনে করছেন ফিলিপিন্সের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন নেপালকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে। নেপালের আগে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাতেও সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সরকার উল্টে গিয়েছে। এ বার বিদ্রোহের আগুন জ্বলল এশিয়ার আর এক দেশে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement