নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলকে তাড়া করে মার উত্তেজিত জনতার। ছবি: এক্স।
অগ্নিগর্ভ নেপালে এ বার উত্তেজিত জনতার হাতে মার খেলেন উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেল। মঙ্গলবার দুপুরে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা মাঝরাস্তায় তাড়া করেন তাঁকে। লাথিও মারা হয় উপপ্রধানমন্ত্রীকে। সোমবার তরুণদের বিদ্রোহে ১৯ জনের মৃত্যুর পরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে। এরই মধ্যে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রীকে তাড়া করে মারধরের একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
একটি বাড়ির ছাদ থেকে ওই ভিডিয়োটি তোলা হয়েছে। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, এক দল উত্তেজিত জনতা রাস্তায় এক ব্যক্তিকে তাড়া করছেন। যাঁকে তাড়া করে মারধর করা হচ্ছে, তাঁর মুখ ভিডিয়োয় স্পষ্ট নয়। তবে নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, ওই ব্যক্তি নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী বিষ্ণু। ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, তিনি দৌড়ে পালাচ্ছেন। পিছনে ধাওয়া করেছে এক দল সাধারণ মানুষ। তিনি দৌড়ে পালানোর সময়েই সামনে থেকে এক ব্যক্তি ছুটে এসে তাঁর কোমর বরাবর লাথি মারেন। সজোরে ওই লাথির অভিঘাতে ছিটকে পড়েন উপপ্রধানমন্ত্রী। রাস্তার ধারে একটি বাড়ির পাঁচিলে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান তিনি। কোনওক্রমে উঠে আবার পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তত ক্ষণে পিছনে ধাওয়া করা উত্তেজিত জনতা তাঁকে ধরে ফেলেন। এর পরে বিষ্ণুকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের একটি সরু গলিতে।
ছাত্র-যুবদের বিদ্রোহ মঙ্গলবার সকাল থেকেই তীব্র আকার ধারণ করতে শুরু করেছিল। একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতে থাকেন উত্তেজিত জনতা। অগ্নিসংযোগ হয়েছে নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেলের বাসভবনে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা সিপিএন নেতা প্রচণ্ডের বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। এ ছাড়া সদ্য ইস্তফা দেওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের বাসভবনেও আগুন ধরানো হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে নেপালি কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবার বাড়িতে, নেপালি কংগ্রেসের সদর দফতরে। এ ছাড়া ইউএমএল নেতা মহেশ বাসনেত, নেপালি কংগ্রেসের নেতা গগন থাপার বাড়িতেও আগুন ধরানো হয়েছে। নেপালের পার্লামেন্ট ভবন এবং সুপ্রিম কোর্টেও তাণ্ডব চলে।
এই উত্তেজনা এবং অশান্তির মাঝেই নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন কেপি শর্মা ওলি। সোমবার থেকেই ওলির পদত্যাগের দাবি উঠতে শুরু করেছিল। মঙ্গলবার সেই একই দাবিতে বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালেই নেপালের সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে ওলির। ওই সময় ওলিকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছিল সেনা। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়েন ওলি। এর পাশাপাশি নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জল সরবরাহ মন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রীও ইস্তফা দিয়েছেন।