Nepal Violence

পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি! গণবিদ্রোহের দাবি মেনে নিয়ে নতিস্বীকারে বাধ্য করল সেনা

দেশজোড়া বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করলেন। গণবিদ্রোহের দাবি মেনে নিলেন তিনি। সেনাবাহিনীর তরফেও তাঁকে পদত্যাগের অনুরোধ করা হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১৮
Share:

গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দেশজোড়া বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করলেন। গণবিদ্রোহের দাবি মেনে নিলেন তিনি। সেনাবাহিনীর তরফেও তাঁকে পদত্যাগের অনুরোধ করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এর পর সেনাবাহিনীর কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান ওলি। তার পরেই পদত্যাগ করেন।

Advertisement

রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে লেখা পদত্যাগপত্রে ওলি লিখেছেন, ‘‘নেপালের সংবিধান অনুযায়ী আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজতে, রাজনৈতিক ভাবে সমাধান করতে আমি পদত্যাগ করছি।’’ নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল ওলির ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেছেন।

ওলির পাশাপাশি তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যেরাও বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। মন্ত্রীদের অনেকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। ওলির ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন ধরানো হয়েছে। সূত্রের খবর, দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করছেন ওলি। তাঁর গন্তব্য হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই। তবে এখনও এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি।

Advertisement

বিক্ষোভের মুখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ওলি। মঙ্গলবার সকালেই তিনি জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যায় সর্বদল বৈঠক করবেন। কী ভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, উদ্ভূত সমস্যার সমাধানের পথ কী, তা নিয়ে বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে তিনি আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে তার আগেই তাঁকে পদত্যাগ করতে হল।

সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নেপাল সরকার। তা ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। দীর্ঘ দিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতি দেয় ওলির ওই সিদ্ধান্ত। প্রতিবাদে পথে নামে দেশের ছাত্রযুবরা। তাদের বিক্ষোভে সোমবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল রাজধানী কাঠমান্ডু। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ গুলি চালায়। তাতে মৃত্যু হয় অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারীর। এর পর বিক্ষোভের ঝাঁজ আরও বেড়ে গিয়েছে। চাপে পড়ে রাতেই নেপাল সরকার সমাজমাধ্যমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিবৃতি জারি করেছিল। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওলির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। ফলে চাপের মুখে নতিস্বীকার করতে হল ওলিকে।

দেশ ছাড়ার জন্য নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারেন ওলি। ইতিমধ্যে ওই বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে সমস্ত উড়ান। সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার ওলি এবং নেপালের অন্য মন্ত্রীদের নিরাপদে সরানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ৩০০-র বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

নেপালের পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে তা জানানো হয়েছে। নেপালে বসবাসকারী ভারতীয়দের সাবধানে থাকতে এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement