Arakan Army in Bangladesh

'আরাকান আর্মি ঢুকল বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ১০ কিলোমিটার অন্দরে'! জামায়াতের নিশানায় ইউনূস

মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে এর আগে সীমান্তে গুলিবর্ষণ এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বার উঠল সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৯
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অন্দরে ১০ কিলোমিটার ঢুকে উৎসব পালনের অভিযোগ উঠল মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ এবং রোহিঙ্গা সংগঠনের মুখপত্র ‘রোহিঙ্গা খবর’ জানাচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

Advertisement

‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত) বিষয়টি নিয়ে নিশানা করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে। জামায়াতের মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন ‘‘গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল উর্দি পরিহিত, অস্ত্রধারী আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সার্বভৌম সীমা লঙ্ঘন করে বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় বাংলাদেশের ১০ কিলোমিটার ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে। সেখানে তারা স্থানীয় জনজাতিদের নিয়ে ‘জলকেলি উৎসব’ (ওয়াটার ফেস্টিভ্যাল) পালন করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে এর আগে সীমান্তে গুলিবর্ষণ এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বার উঠল সরাসরি সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ। প্রকাশিত খবরে দাবি, রেমাক্রি জলপ্রপাতে আয়োজিত ওই ‘জলকেলি উৎসবে’ আরাকান আর্মি এবং তাদের রাজনৈতিক শাখা ‘ইউএলএ’র বেশ কয়েক জন প্রথম সারির নেতা এবং তাঁদের অনুগামীরা উর্দি পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাজির ছিলেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বান্দরবান লাগোয়া মায়ানমারের লাভ্রের (স্থানীয় নাম কুখাই রাখাইন) এলাকার ইউএলএ প্রধান মংথুইহ্লা মারমা, আরাকান আর্মির লেফটেন্যান্ট জোকা, ক্যাপ্টেন ক্যজো রাখাইন, ক্যাপ্টেন ভোলং রাখাইন প্রমুখ।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বান্দরবান জেলা পরিষদ এবং স্থানীয় ইউনিয়ন বোর্ডের কয়েক জন পদাধিকারীও হাজির ছিলেন বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগ, মায়ানমার সীমান্তে নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ বাহিনীর বেশ কয়েক জন জওয়ান ও অফিসার রেমাক্রি জলপ্রপাতের অদূরের শিবিরে থাকলেও তাঁরা কেউ আরাকান আর্মির নেতা-কর্মীদের অনুপ্রবেশে বাধা দেননি! প্রসঙ্গত, মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ২৭১ কিলোমিটার। গত দেড় বছরের যুদ্ধে তার পুরোটাই দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।

গত ডিসেম্বরে মংডু, বুথিডং, পালেতাওয়ার শহর-সহ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। রাখাইন প্রদেশের সঙ্গেই রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাসকারী কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউনূসের সরকার। একদা মায়ানমারের শাসক সামরিক জুন্টার ‘চক্ষুশূল’ রোহিঙ্গা মুসলিমরা চলতি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হয়েছিল! আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজ়েশন (আরএসও)-এর যোদ্ধারা গত ছ’মাস ধরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জুন্টা ফৌজের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়েছে। কিন্তু তাতে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন করে আরাকান আর্মির নিশানা হয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement