কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ইস্যু, বদল হয়নি আমেরিকার অবস্থান, মার্কিন বার্তায় স্বস্তি নয়াদিল্লির

অর্টাগাসকে বলেন, ‘‘নীতিগত ভাবে (কাশ্মীর ইস্যুতে) আমেরিকার অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হলে তা নিশ্চয়ই এখানে ঘোষণা করতাম না। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ১৫:১৪
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

৩৭০ ধারা রদ হওয়ার পরেও কাশ্মীর প্রশ্নে আমেরিকার নীতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল হোয়াইট হাউস। তবে ভারত এবং পাকিস্তানকে সংযম রক্ষা করে চলার আহ্বান জানিয়েছে আমেরিকা। এর ফলে পাকিস্তানের অস্বস্তি বাড়ল বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।

Advertisement

আমেরিকার ঘোষিত কূটনৈতিক নীতি অনুযায়ী, কাশ্মীর ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। সেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ করার পক্ষপাতী নয় হোয়াইট হাউস। কিন্তু ৩৭০ ধারা রদের পর পরিস্থিতি পাল্টেছে। তাই সাংবাদিকরা এ দিন মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্রকে মর্গান অর্টাগাসকে প্রশ্ন করেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মার্কিন বিদেশনীতি বা কূটনীতিতে কোনও পরিবর্তন এসেছে কি না। জবাবে অট্রেগাস সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘‘না, কোনও বদল হয়নি।’’

কিন্তু সাংবাদিকরা ফের একই প্রশ্ন করেন। তখন অবস্থান আরও স্পষ্ট করতে অর্টাগাসকে বলেন, ‘‘নীতিগত ভাবে (কাশ্মীর ইস্যুতে) আমেরিকার অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হলে তা নিশ্চয়ই এখানে ঘোষণা করতাম না। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি।’’ অর্থাৎ অর্টাগাস বলতে চেয়েছেন, নীতিগত কিছু বদল হলে সেটা অনেক বড় বিষয়, এবং তা সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হত। এই রকম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে নয়। তবে দুই দেশকেই কাশ্মীর অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাথার আর্জিও জানিয়েছেন মার্কিন মহিলা এই কূটনীতিক। এদিন একই বার্তা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও।

Advertisement

কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ভারত-পাক আলোচনা চায় আমেরিকা— এই বার্তা দিয়ে অর্টাগাসকে বলেন, ‘‘দু’পক্ষকেই শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত থাকতে বলা হয়েছে। আমরা শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পক্ষে। কাশ্মীর এবং অন্যান্য ইস্যুতে আমরা সব সময়ই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাকে সমর্থন করি।’’

আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে হস্তক্ষেপের পাক দাবিতে কান দিল না রাষ্ট্রপুঞ্জ, আনল শিমলা চুক্তির কথা

আরও পড়ুন: ইদের আগে কাশ্মীরে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল, আংশিক ভাবে ফিরল টেলিফোন-ইন্টারনেট পরিষেবা

সপ্তাহ দু’য়েক আগেই মার্কিন সফর সেরে ফিরেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন অর্টাগাস বলেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আমরা নজর রাখি। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কিছু দিন আগেই এসেছিলেন। কিন্তু শুধুমাত্র কাশ্মীর ইস্যুতে যে আলোচনা হয়েছিল, তা নয়। তবে কাশ্মীর অবশ্যই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার উপর আমরা সব সময় নজর রাখি। তবে এটা ছাড়াও দুই দেশের আরও অনেক বিষয়েই আমেরিকা অনুসরণ করি।’

ইমরানের মার্কিন সফরের সময়ই ভারতের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, মোদী তাঁকে কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে হস্তক্ষেপ করতে বলেছিলেন। তা নিয়ে ভারতে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে নয়াদিল্লি জানিয়েছিল, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ইস্যু। ভারতের সেই বক্তব্যকেই আরও এক বার সিলমোহর দিল আমেরিকা।

ভারত সব সময়ই মনে করে কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। সেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত নয়— এটাই নয়াদিল্লির ঘোষিত অবস্থান। উল্টো দিকে পাকিস্তান একে বরাবরই আন্তর্জাতিক সমস্যা বলে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে মরিয়া চেষ্টা চালায়। ৩৭০ ধারা রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দেওয়ার পর ভারতের এই সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরার সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। তার মধ্যেই আমেরিকার এই অবস্থান নয়াদিল্লিকে আন্তর্জাতিক মহলে অনেকটাই স্বস্তি দেবে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন