প্রার্থনার সময় কায়রোর গির্জায় বিস্ফোরণ, নিহত অন্তত ২৫, আহত ৩১

রবিবারের কায়রো শহর। সাধারণত সকাল সকালই ঘুম ভাঙে শহরটার। এ দিনও সকালের প্রার্থনা সারতে কায়রোর বিখ্যাত সেন্ট মার্ক গির্জায় অন্তত শ’খানেক মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। আচমকা বিস্ফোরণ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিকট আওয়াজে ভেঙে পড়ল ক্যাথিড্রালের একটা দেওয়াল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কায়রো শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১৭
Share:

বিস্ফোরণের পর। কায়রোর সেন্ট মার্ক গির্জায়। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।

রবিবারের কায়রো শহর। সাধারণত সকাল সকালই ঘুম ভাঙে শহরটার। এ দিনও সকালের প্রার্থনা সারতে কায়রোর বিখ্যাত সেন্ট মার্ক গির্জায় অন্তত শ’খানেক মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। আচমকা বিস্ফোরণ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিকট আওয়াজে ভেঙে পড়ল ক্যাথিড্রালের একটা দেওয়াল। নিমেষে কেড়ে নিল অন্তত ২৫টি নিরীহ প্রাণ। গুরুতর আহত ৩১ জন এখন হাসপাতালে ভর্তি। সাত দিনের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বার জঙ্গি হামলার মুখে পড়ল মিশরের রাজধানী।

Advertisement

বিস্ফোরণের পর কেটে গিয়েছে কয়েক ঘণ্টা। থেমে গিয়েছে আহত মানুষের আর্তনাদ আর বাঁচার জন্য হুড়োহুড়ি। তখনও গির্জা সংলগ্ন চত্বরে ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে কাচের টুকরো, কংক্রিটের চাঙড়, দলা পাকানো আসবাব আর চাপ-চাপ রক্ত। উল্টো দিকের রাস্তায় চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়ে বসে থাকা এক মহিলা বললেন, ‘‘চোখের সামনে দেখলাম, মুন্ডুহীন, দলাপাকানো একটা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। জানেন, গির্জার মধ্যে আজ কত বাচ্চা ছিল। ওদেরই বা কী হল?’’ বিড়বিড় করে বলছিলেন, ‘‘বুঝতে পারছি না এ সব দেখার পরেও কেন বেঁচে আছি।’’

দু’দিন আগেই কায়রোর অদূরে গিজার রাস্তায় বিস্ফোরণে ছয় পুলিশকর্মী নিহত হন। গুরুতর জখম হন তিন জন। অন্য দিকে কাফর এল-শেখ আন্তর্জাতিক সড়কে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়। আহত হন তিন পুলিশকর্মী। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবারের ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা। ওই দুই হামলায় ‘হাসম’ নামে নতুন এক জঙ্গি সংগঠন দায় স্বীকার করলেও রবিবারের বিস্ফোরণ নিয়ে মুখ খোলেনি কেউই। তবে এ দিনের ঘটনায় সন্দেহের তির সিনাইয়ের জেহাদিদের দিকেই।

Advertisement

এর আগেও একাধিক বার মিশরে জঙ্গি হামলায় নিশানায় ছিলেন সংখ্যালঘুরা। তবে সাম্প্রতিক অতীতে এটাই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর সব চেয়ে বড় হামলার ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। মিশরে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ রক্ষণশীল কপটিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ভুক্ত। রবিবারের বিস্ফোরণস্থল সেন্ট মার্ক গির্জা ওই সম্প্রদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মস্থান। এখানেই থাকেন কপটিক সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ দ্বিতীয় তাওয়াদ্রোস। অনুমান, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে এ দিন গির্জার বাইরের দেওয়ালে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তা ছাড়া রবিবার যেহেতু বিশেষ প্রার্থনার জন্য প্রচুর মানুষ গির্জায় জড়ো হন তাই এ দিনটাই বেছে নিয়েছিল হামলাকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন