খাদ্যশস্য আমদানিতে গুরুত্ব দিচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
খাদ্যশস্য উৎপাদনে ঘাটতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। তাই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে শস্য আমদানির উপর জোর দিচ্ছে সে দেশের তদারকি সরকার। রবিবার এ কথা জানিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলি ইমাম মজুমদার। ভারত ছাড়াও একাধিক দেশ থেকে টন টন চাল আমদানির কথা ভাবনাচিন্তা করছেন তাঁরা। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, তালিকায় রয়েছে মায়ানমার, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, তাইল্যান্ড-সহ আরও কিছু দেশ। তবে শস্যের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ভারত থেকে চাল আমদানিই যে সাশ্রয়ী হবে, তা-ও বুঝছে ইউনূসের প্রশাসন। তাই ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েনের মাঝে রাজনীতি ও বাণিজ্যকে আলাদা রাখতে চাইছে সে দেশের খাদ্য মন্ত্রক।
ইউনূসের খাদ্য উপদেষ্টা জানিয়েছন, আপাতত চাল আমদানিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে দেশে বর্তমানে ২২ লাখ টন চাল মজুত রয়েছে। সেটিকে ৩০ লাখ টন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমদানির জন্য কোনও একটি দেশের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাইছে না বাংলাদেশ। সে কথা মেনেও ভারতের থেকে চাল আমদানির সুবিধাগুলিও মাথায় রাখছেন সে দেশের খাদ্য মন্ত্রক। এ প্রসঙ্গে খাদ্য উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আমরা বাণিজ্যকে রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে ফেলি না। ভারত থেকে চাল কিনলে তুলনামূলক ভাবে খরচ কম পড়বে। এ জন্য দেড় লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া আছে। আমরা আশা করি, সে চাল দ্রুত আসবে।”
তবে বাংলাদেশের তদারকি সরকার যে শুধুমাত্র একটি দেশের উপর নির্ভর করে থাকতে চাইছে না, তা-ও নিজের বক্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। খাদ্য উপদেষ্টার কথায়, “আমরা একক কোনও একটি দেশের ওপর নির্ভর করব না।” বাংলাদেশে খাদ্যশস্যে ঘাটতির কথা মেনে নিয়ে সেই ঘাটতি পূরণকেই অগ্রাধিকার দিতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যে অন্যান্য দেশগুলি থেকে চাল আমদানির কথা ভাবছে ইউনূসের প্রশাসন। আলি ইমামের বক্তব্য, “ভারতের থেকে চাল আমদানি বাণিজ্য ও রাজনীতিকে আমরা একসঙ্গে দেখছি না, বাণিজ্যকে আমরা বাণিজ্যিক ভাবে দেখছি।”
ভারত থেকে দেড় লাখ টন চালের পাশাপাশি মায়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বাকি দেশগুলির থেকেও চাল আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে ইউনূসের প্রশাসনে। শুধু চালই নয়, গমের উৎপাদনও সে দেশে চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম। বাংলাদেশের খাদ্য উপদেষ্টা জানান, সেখানে ৭০ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। তবে ১০ লাখ টনের বেশি উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ফলে বাকি গমের জন্যও আমদানির উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে।