(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে এ বার দেশে ফেরাতে চেয়ে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার! বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, হাসিনাদের ফেরাতে ইন্টারপোলের সাহায্যের কথা ভাবছে ইউনূস প্রশাসন। কী ভাবে এই সাহায্য চাওয়া যায়, তার পরিকল্পনাও চলছে।
২০২৪ সালের জুলাই-অগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ। অভিযোগ, সেই সময় ওই আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান! তবে আন্দোলনের তেজ এতটাই ছিল যে, শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন হাসিনা। তার পরেই বাংলাদেশ ছাড়েন তিনি। সেই থেকে ভারতেই রয়েছেন হাসিনা। শুধু তিনি একা নন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসেন আসাদুজ্জামানও। তাঁরা দেশে না-থাকলেও তাঁদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের শুনানি হয় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে। সওয়াল-জবাব, সাক্ষ্যগ্রহণের পর সোমবার হাসিনাদের দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয় বাংলাদেশের আদালত।
সাজা ঘোষণার পর থেকেই হাসিনাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৎপর হয় সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে হাসিনাদের ফেরত দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়। শুধু তা-ই নয়, দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়া প্রত্যপর্ণ চুক্তির কথাও নয়াদিল্লিকে মনে করিয়ে দিয়েছে ঢাকা। বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানানো হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের (হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) দ্বিতীয় কোনও দেশ যদি আশ্রয় দেয়, তবে তা ‘অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ’ হবে, যা ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল! ভারতের কাছে তাদের আবেদন, অবিলম্বে যেন হাসিনাদের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই বিবৃতির পাল্টা বিবৃতি জারি করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও। তারা জানায়, হাসিনাদের সাজা ঘোষণা সম্পর্কে অবগত। ভারত সবসময় বাংলাদেশের মানুষের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার পক্ষেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হাসিনাদের প্রত্যর্পণ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে চিঠিও দেবে ইউনূস প্রশাসন।
যদিও এখানেই থেমে থাকতে চাইছে না বাংলাদেশ সরকার। সরকারি আইনজীবী গাজ়ি এমএইচ তামিম জানান, অতীতেই দুই পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য ইন্টারপোলের কাছে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। তবে সাজা ঘোষণার পর ইন্টারপোলের কাছে দোষী সাব্যস্ত পরোয়ানার ভিত্তিতে নতুন করে ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারির আহ্বান করা হবে।