Sheikh Hasina Verdict

ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া ছাড়াও আর কী পদক্ষেপ করছে ঢাকা? জানালেন আইন উপদেষ্টা

বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়েছে। তার পর সাংবাদিক বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা। হাসিনাদের প্রত্যর্পণের বিষয়ে ঢাকার পদক্ষেপের কথা বলেছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৩৪
Share:

(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। কিন্তু তিনি ভারতে রয়েছেন। ভারত থেকে কী ভাবে হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, কী ভাবে ‘বিচার’ সম্পন্ন করা যায়, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তা বিবেচনা করে দেখছে। বৃহস্পতিবার সে দেশের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করেছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে কী কী পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে, তা-ও জানিয়েছেন।

Advertisement

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়েছে। তার পর সাংবাদিক বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আসিফ জানিয়েছেন, হাসিনাকে ফেরানোর জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দেবে বাংলাদেশ। তার প্রস্তুতি চলছে। তা ছাড়া, সাজাপ্রাপ্তদের দেশে ফেরানোর জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দরবার করা যায় কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শুধু হাসিনা নন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইবুনাল। তাঁকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হাসিনার মতো তিনিও পলাতক এবং ভারতে আশ্রয়ী। ঢাকার আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আসাদুজ্জামানের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। যে হেতু তাঁরা এখন সাজাপ্রাপ্ত, তাঁদের ফেরানোর ক্ষেত্রে ভারতের বাড়তি দায়িত্ব এখন রয়েছে বলে সরকার মনে করে। বাংলাদেশের মানুষের বিচারের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ভারত যাতে প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী নিজেদের দায়িত্ব পালন করে, তা চিঠিতেও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, গত সোমবার হাসিনা এবং আসাদুজ্জামানের সাজা ঘোষণার পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিবৃতি জারি করেছিল। সেখানেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়েছিল ঢাকা। মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির কথাও। বাংলাদেশ বিবৃতিতে বলেছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের (হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) দ্বিতীয় কোনও দেশ যদি আশ্রয় দেয়, তবে তা ‘অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ’ হবে, যা ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল! তাই ভারতের কাছে তাদের আবেদন, অবিলম্বে যেন হাসিনাদের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ‘দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে’ এটি ভারতের অবশ্যই পালন করা দায়িত্ব। এর পরে পাল্টা নয়াদিল্লির তরফেও একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছিল। তাতে বাংলাদেশকে ‘ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী’ বলে উল্লেখ করে বিদেশ মন্ত্রক জানায়, হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল যে রায় দিয়েছে, সে সম্পর্কে তারা অবগত। বাংলাদেশের মানুষের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার পক্ষে রয়েছে ভারত। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement