Nepal Unrest

পাঁচ দিনের ফারাক! বৃহস্পতিতেও ক্ষমতার অলিন্দে, মঙ্গলবার রক্তাক্ত অপসারণ নেপালের বিদেশমন্ত্রীর

মঙ্গলবার নেপালের গণবিক্ষোভের আঁচ গিয়ে পড়ে সদ্যপ্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বাসভবনে। ভাইরাল হওয়া মাত্র ৪০ সেকেন্ডের ভিডিয়োয় দেখা যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা এবং তাঁর স্ত্রী আরজু রক্তাক্ত!

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৩
Share:

নেপালের অশান্তির আগে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা (বাঁ দিকে) এবং বিক্ষোভকারীদের হাতে আক্রান্ত হন তিনি (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন নেপালের সদ্যপ্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা। আমেরিকা প্রদত্ত দুই বিমানের উন্মোচনের অনুষ্ঠান ছিল। সরকারি অনুষ্ঠানে আরজুর সঙ্গে অনেকেই মেলাতে পারছেন না ৯ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) ভাইরাল হওয়ার তাঁর ছবি-ভিডিয়োর সঙ্গে!

Advertisement

গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপালের বিদেশ মন্ত্রকের একটি এক্স পোস্টে দেখা গিয়েছিল দু’টি বিমানের উন্মোচন করছেন আরজু। শুধু তা-ই নয়, নেপাল ও আমেরিকার অংশীদারির প্রতীক হিসাবে ওই বিমানগুলির কথা উল্লেখও করেছেন তিনি। আমেরিকাকে কৃতজ্ঞতা জানান আরজু। পাশাপাশি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য অতিথিদের সঙ্গেও খোশমেজাজে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই হাসি মাত্র চার দিনের ব্যবধানে বদলে গেল কান্না এবং অসহায়তায়!

মঙ্গলবার নেপালের গণবিক্ষোভের আঁচ গিয়ে পড়ে আরজুর বাসভবনে। ভাইরাল হওয়া মাত্র ৪০ সেকেন্ডের ভিডিয়োয় দেখা যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা এবং তাঁর স্ত্রী আরজু রক্তাক্ত! ওই ভিডিয়োয় আরও দেখা গিয়েছে, একটি ভবনে আগুন জ্বলছে। ধোঁয়া বেরোচ্ছে ওই ভবন থেকে। ভবনের প্রাঙ্গণে প্রচুর মানুষের ভিড়। সেই ভিড়ের মধ্যেই রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রীকে। পোশাকে রক্তের ছোপ দেখা গিয়েছে। তাঁদের ধরাধরি করে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েক জন ব্যক্তি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলিতে দাবি করা হয়, উত্তেজিত জনতার হাতে মার খেয়েছেন দেউবা দম্পতি। প্রাণভিক্ষা করতেও দেখা যায় তাঁদের!

Advertisement

সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার থেকেই বিদ্রোহ শুরু করেন নেপালের ছাত্র-যুবরা। ওই বিক্ষোভে ১৯ জন বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু হয়। শেষে ছাত্র-যুবদের আন্দোলনের মুখে সোমবার রাতেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় নেপাল সরকার। কিন্তু এর পরেও বিদ্রোহ থামেনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের দাবিতে বিদ্রোহ আরও জোরালো হয়। একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এই বিদ্রোহের মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ওলি। কিন্তু এর পরেও বিক্ষোভ থামেনি। ওলির ইস্তফার পরেই সেনাবাহিনী একে একে দখল নেয় নেপালের জাতীয় সচিবালয় থেকে বিমানবন্দর। রাস্তায় রাস্তায় টহলদারি শুরু করে তারা। বুধবার সকাল থেকে নেপালে বড় ধরনের কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও চলছে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ। তবে মোটের পরিস্থিতি আপাতত শান্ত। আনুষ্ঠানিক ভাবে নেপালের দায়িত্ব নিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, যত দিন পর্যন্ত না নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে, তত দিন দেশের শাসনভার চালাবে তারা। শুধু তা-ই নয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করা হয়েছে সেনার তরফে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement