ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেনের মধ্যে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্যে নতুন চুক্তি। —প্রতীকী চিত্র।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষায় নতুন করে চুক্তি করছে ব্রিটেন। সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেনের যৌথ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ব্রিটেন। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে এমন বড় পর্যায়ের কোনও সমঝোতা এই প্রথম।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেন কাছাকাছি আসতে শুরু করেছিল। বিভিন্ন বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির সঙ্গে এক টেবিলে আলোচনায় বসতে দেখা গিয়েছে ব্রিটেনকে। এমনকি রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেন একসঙ্গে বসে আলোচনা করেছে। এ বার দু’পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা নিয়ে নতুন চুক্তিও হয়ে গেল। বস্তুত, ২০১৬ সালে ব্রিটেনে ভোটাভুটির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্রিটেনের রাজনৈতিক ইতিহাসে সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা ‘ব্রেক্সিট’ নামে অধিক পরিচিত। ওই ঘটনার ৯ বছর পরে ফের দু’পক্ষের মধ্যে এই ধরনের কোনও চুক্তি হল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততাও জমতে শুরু করেছিল। যদিও গত কয়েক বছরে সমীকরণ অনেকটা বদলেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, সাম্প্রতিক বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে সিংগভাগ ব্রিটিশই ৯ বছর আগের ওই সিদ্ধান্তকে ভুল বলে মনে করছেন। তবে নতুন করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হতে চান না তাঁরা।
এই আবহে ট্রাম্পের শুল্কনীতি ইউরোপকে আরও ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে সাহায্য করেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইউরোপকে নিজের সুরক্ষার জন্য আরও কাজ করা উচিত বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। অনুমান করা হচ্ছে, তাঁর ওই মন্তব্যের জেরেই ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ভাবনাই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ এবং অন্য ইউরোপীয় নেতাদের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।
ব্রিটেন জানিয়েছে, তাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক সঙ্গীর সঙ্গে নয়া চুক্তির মাধ্যমে খাদ্য এবং কৃষিজ উৎপাদনে সুবিধা মিলবে, খাবারের দাম কমবে এবং জ্বালানি-নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি পাবে। ২০৪০ সালের মধ্যে ব্রিটেনের অর্থনীতিতে প্রায় ১,২১০ কোটি ডলার যুক্ত হবে বলেও আশাবাদী ব্রিটেন। স্টার্মার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এটি সামনের দিকে তাকানোর সময়। পুরনো বিতর্ক এবং রাজনৈতিক লড়াই থেকে সরে এসে ব্রিটিশ জনতার জন্য বাস্তব সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।”