Bangladesh Unrest

হাদিকে খুনের অন্যতম উদ্দেশ্য ‘ভোট বানচাল করা’! ইউনূস সরকারের একাংশও জড়িত বলে অভিযোগ নিহতের দাদার

ওমর হাদি জানান, কী ভাবে ‘এজেন্সি’-র রক্তচোখকে উপেক্ষা করে নেতা হতে হয়, তা হাদি শিখিয়ে গিয়েছেন। তিনি বার বার নিশানা করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৩৯
Share:

শরিফ ওসমান হাদির খুনে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের দিকে আঙুল তাঁর ভাইয়ের। — ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন ভেস্তে দিতেই শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে খুন করা হয়েছে! এমনটাই অভিযোগ করলেন নিহতের দাদা শরিফ ওমর হাদি। তিনি আঙুল তুলেছেন বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশের দিকে।

Advertisement

মঙ্গলবার ঢাকার শাহবাগে ‘শহিদি শপথ’ নামে একটি কর্মসূচির আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ। সেই সংগঠনেরই আহ্বায়ক ছিলেন নিহত হাদি। তিনি ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে লড়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর গুলিবিদ্ধ হন হাদি। পরে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে হাদির দাদা ওমর বলেন, ‘‘ওসমান হাদি বলেছিল, ফেব্রুয়ারিতে দেশে নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচন করার জন্য সে প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু তাকেই হত্যা করে নির্বাচনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’

সেই কর্মসূচিতে হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবিও তুলেছেন দাদা ওমর। তিনি বলেন, ‘‘ওসমান হাদি শহিদ হয়েছে আজ ষষ্ঠ দিন। সরকার পদক্ষেপ করার বিষয়ে কোনও অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। সরকারের কাছে দাবি জানাই, হাদির খুনিচক্রকে জাতির সামনে তুলে ধরুন।’’ এখানেই থামেননি ওমর। তাঁর হুঁশিয়ারি, এ ভাবে চললে পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো এই সরকারের লোকজনও দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবেন। তাঁর কথায়, ‘‘একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলনের আগে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, যাঁরা রাষ্ট্রকে নিজেদের মনে করতেন, তাঁরা কিন্তু আজ আর বাংলাদেশে নেই। তাঁরা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। ওসমান হাদির খুনের বিচার না হলে আপনারাও একদিন দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হবেন।’’

Advertisement

হাদির দাদা আরও জানিয়েছেন যে, তিনি কারও কাছে মাথা নত করেননি। তিনি বলেন, ‘‘যে এজেন্সির হয়ে, যে রাষ্ট্রের হয়ে আপনারা ওসমান হাদিকে হত্যা করেছেন, মনে রাখবেন, সেই ওসমান হাদি কোনও এজেন্সি, কোনও রাষ্ট্র, কোনও তাঁবেদারের কাছে কখনওই মাথা নত করেনি।’’ ওমর জানান, কী ভাবে ‘এজেন্সি’-র রক্তচোখকে উপেক্ষা করে নেতা হতে হয়, তা হাদি শিখিয়ে গিয়েছেন। তিনি বার বার নিশানা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারকে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের কাছে আমি অনুরোধ করব, আপনারা যখন ক্ষমতায়, তখন ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার দায় আপনারা এড়াতে পারবেন না। আপনাদেরও বিচার হবে। আজ হোক, ১০ বছর পরে হোক, বিচারের কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতেই হবে।’’

হাদির খুনের দ্রুত বিচার চেয়ে তাঁর দাদা বার বার কাঠগড়ায় তুলেছেন ইউনূস সরকারকে। তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা যদি মনে করেন, আর দু’মাস পরে ক্ষমতা থেকে চলে যাবেন, বিদেশে চলে যাবেন, মনে রাখবেন, এই দেশের জনতা আপনাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকারকে অনুরোধ করব, দ্রুত খুনিদের আমাদের সামনে নিয়ে আসুন। নির্বাচনের পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয়, খুনির বিচার করুন।’’ এর পরে হাদির খুনে ওমর সরাসরি আঙুল তুলেছেন ইউনূস সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘‘আপনারাই ওসমান হাদিকে হত্যা করিয়েছেন, আবার আপনারাই এটাকে ইস্যু করে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছেন, তা আমরা কখনওই হতে দেব না।’’ তিনি জানিয়েছেন, হাদির খুনিদের গ্রেফতার করা না হলে তাঁরা পথ ছাড়বেন না। সমর্থকদের সেই ‘শপথ’ নিতে বলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement