৪৯ ডিগ্রি ছুঁল সিডনি, পুড়ছে ক্যানবেরাও

আকাশ থেকে দেখলে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার এই অংশটা এখন ঝলসে যাওয়া কালো মাটিতে ঢাকা। কয়েক মাস আগেও সেখানে চোখ জুড়োনো ঘন সবুজ ছিল। সরকারি খতিয়ান বলছে, শনিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

সিডনি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২১
Share:

ভিক্টোরিয়ার একটি দাবানল কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে। এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া বদলে দিচ্ছে দাবানল।

Advertisement

শনিবার নিউ সাউথ ওয়েলসের দমকল দফতর জানিয়েছে, আগুনের তাপে প্রবল শক্তিশালী বজ্রগর্ভ মেঘের স্তম্ভ তৈরি হচ্ছে। বাড়ছে ঝড়ের দাপট। ঘন ঘন আগুনের ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে হানা দিচ্ছে নিউ সাউথ ওয়েলস আর ভিক্টোরিয়ায়। তার উপরে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় বৃষ্টির নামগন্ধ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা জানিয়েছে, পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। দাবানল কবলিত নিউ সাউথ ওয়েলস আর ভিক্টোরিয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবার অতিরিক্ত ৩ হাজার সেনা নামানো হয়েছে।

আকাশ থেকে দেখলে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার এই অংশটা এখন ঝলসে যাওয়া কালো মাটিতে ঢাকা। কয়েক মাস আগেও সেখানে চোখ জুড়োনো ঘন সবুজ ছিল। সরকারি খতিয়ান বলছে, শনিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩।

Advertisement

এই অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১৫০০টি বাড়ি। সিডনির তাপমাত্রা ৪৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে রেকর্ড ভেঙেছে। রেকর্ডগড়া তাপমাত্রা রাজধানীর ক্যানবেরাতেও। সেখানে তা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার দাবানল ছড়িয়েছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন জায়গায়। সেখানে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ক্যাঙারু দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ক্ষতিগ্রস্ত বহু হোটেল ও বাড়ি।

গত সেপ্টেম্বরেই সিডনিতে এসেছেন দীপন কুণ্ডু। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান তিনি। জানালেন, সিডনি থেকে কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে জ্বলছে আগুন। তিনি বললেন, ‘‘হাওয়া অভিমুখ বদলানোয় পরিস্থিতি এখন একটু ভাল। কয়েক সপ্তাহ আগেও ভয়াবহ অবস্থা ছিল সিডনিতে। ধোঁয়ার জেরে বাড়ির বাইরে বেরনো যাচ্ছিল না।’’ মেলবোর্নে বাসিন্দা বলাকা ঘোষ জানালেন, তাঁরা এখনও নিরাপদ। তবে দূষণ মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাতাসে ছাইয়ের গুঁড়ো আর পোড়া গন্ধ টের পাওয়াচ্ছে, আগুন আর দূরে নেই।

এই দুর্দিনে দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে শুক্রবারই আসন্ন ভারত সফর বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। আজ ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বিপদের দিনে সব রকম ভাবে অস্ট্রেলিয়ার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মোদী।

পাশাপাশি আজ জাপান সফর বাতিলের কথাও জানান মরিসন। তিনি বলেছেন, ‘‘দেশ জুড়ে বিধ্বংসী দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোই সরকারের একমাত্র লক্ষ্য।’’ জানুয়ারির মাঝামাঝি ভারত ও জাপানে আসার কথা ছিল মরিসনের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে পুনরায় সফরের দিনক্ষণ স্থির করা হবে বলেও জানিয়েছে মরিসনের দফতর।

সেপ্টেম্বর থেকে দাবানলে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়া। তারই মধ্যে সপরিবার হাওয়াইয়ে ছুটি কাটাতে গিয়ে প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মরিসন। সে বার সফর বাতিল করে তড়িঘড়ি দেশে ফিরে আসেন তিনি। ক্ষমাও চান দেশবাসীর কাছে। সমালোচনা এড়াতে এ বার তাই মরিসন বিদেশ সফর বাতিল করলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন