এ বছর গাড়ি বিক্রি বেশ কমেছে চিনে। শুধু ‘লাল পতাকা’ উড়ছেই।
সরকারি কর্তাদের বাড়ির গ্যারাজে, সরকারি সংস্থাগুলোর অফিসে দেখা মিলছে তার। এমনকি, দেশপ্রেমী মানুষও ঝুঁকেছে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সেড্যানের দিকে। চিনা ভাষায় ‘হংছি’। কালো রঙের চোখধাঁধানো সেড্যানটির বিশেষত্ব তার বনেটের উপরের লাল ফলক। খোদ প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ব্যবহার করেন। সেই সঙ্গে অন্য কমিউনিস্ট নেতারাও।
মাও জেদং-এর প্রিয় ব্র্যান্ডের এই বিলাসবহুল গাড়ির প্রতি নতুন করে ভালবাসার পিছনে অবশ্য রয়েছে প্রেসিডেন্ট চিনফিংয়ের আমেরিকা-বিরোধী বাণিজ্য-নীতি। ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই সরকারি আধিকারিকদের ডেকে বলেছিলেন, ‘‘অত বিদেশি গাড়ি চড়বেন না।’’ এর পর থেকেই ধীরে ধীরে বিদেশি পণ্য বর্জন করে সরকারি বিমান সংস্থা, ব্যাঙ্ক থেকে ইস্পাত কারখানা, সকলেই ‘মেক ইন চায়না’য় মেতেছে। অক্টোবর মাসে টেন্ডারে প্রথম ‘হংছি এইচ৭’ কেনে ‘এয়ার চায়না’। দাম শুরু আড়াই লক্ষ ইউয়ান থেকে। সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের দেশের ব্র্যান্ড আমাদের ম্যানেজারদের জন্য।’’ তার পর থেকে চিনের একটি তামাক সংস্থা ১৫টি হংছি নিয়েছে। সরকারি টেলিকম সংস্থা ‘চায়না ইউনিকর্ন’, বিমান সংস্থা ‘চায়না সার্দার্ন এয়ারলায়েন্স’, মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা, কৃষিব্যাঙ্ক, সবাই কিনছে হংছি।
সরকারি সংস্থা ‘এফএডব্লিউ গ্রুপ’-এর গাড়ি হংছি। ফলে তার বিক্রি বাড়ার পিছনে সরকারি সমর্থন তো রয়েইছে। তা ছাড়া শি-র বার্তাও কাজ করছে। এক সরকারি কর্তার কথায়, ‘‘মাথারা যখন বিদেশি গাড়ি না চড়ে দেশে তৈরি গাড়ি ব্যবহার করছে, তখন অধঃস্তনরাও ভাবমূর্তি রাখতে তা ব্যবহার করার কথা ভাবে।’’ আগে দেশের বড় মাথাদের আউডি চড়তে দেখা যেত। এখন সকলে হংছি ব্যবহার করছেন। ‘এফএডব্লিউ গ্রুপ’ আগে আউডি-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই গাড়ি বানাত। এখন তারা হংছি-তে মন দিয়েছে। গাড়ির পড়তি বাজারে ‘রেড ফ্ল্যাগ সেড্যান’-এর বিক্রি বেড়েছে ৬৬২ শতাংশ। প্রস্তুতকারক সংস্থার কথায়, ‘‘চেয়ারম্যান মাওয়ের পতাকা উড়বে।’’