কিম জং
কিছু দিন আগে সিআইএ-র অধিকর্তা মাইক পম্পেও পা ফেলেছিলেন পিয়ংইয়ংয়ে। গোপন বৈঠক করেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে। খবর জানিয়েছে একটি মার্কিন দৈনিক। হোয়াইট হাউস এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই টুইট করে জানান, মাইক পম্পেও গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ায় কিম জং উনের সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই আলোচনা থেকে উঠে আসা বিষয়বস্তু নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ শুধু গোটা বিশ্বের কাজে লাগবে না, উত্তর কোরিয়ারও ভাল হবে। ’’
পম্পেওকে ভবিষ্যতে বিদেশসচিব পদে বসানোর কথা ভাবছেন ট্রাম্প। যদিও পিয়ংইয়ং সফরে পম্পেওর সঙ্গে হোয়াইট হাউস অথবা বিদেশ দফতরের কোনও প্রতিনিধি যাননি। ছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা অফিসাররা। দৈনিকটির দাবি, মে মাসের শেষ দিকে বা জুনের গোড়ায় ট্রাম্প-কিম সাক্ষাতের কথা রয়েছে। তার আগে পম্পেওর সফর তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি ট্রাম্পের দূত হিসেবেই পিয়ংইয়ংয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি। দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প বড় বিষয় হতে চলেছে। কিমের দেশের এই কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা গড়ানোর আগে পরিস্থিতি ‘বুঝতে’ পম্পেওকে পাঠানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে পিয়ংইয়ংয়ের শাসক কিম জং উন বৈঠক করবেন পড়শি দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে। আগামী শুক্রবারই। পম্পেওর সফরের খবর পৌঁছেছে সে দেশেও। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দফতর জানিয়েছে, তাদের পক্ষে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
আপাতত একের পর এক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তৈরি হচ্ছেন কিম। তাঁর শাসনকালে এমনটা ঘটছে এই প্রথম। সম্প্রতি নিষেধে মোড়া উত্তর কোরিয়ায় ঢুকেছে দক্ষিণ কোরিয়ার গানের দল। তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন কিম। শীতকালীন অলিম্পিক্সেও কাছাকাছি আসে দুই দেশ। একনায়কের ভাবমূর্তি ছেড়ে আরও কিছুটা এগোচ্ছেন কিম। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের চোখে সে ছবিই ধরা পড়ছে। গত কয়েক মাসে নিজের বোন কিম ইয়ো জংকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক। দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিক্স থেকেই যার শুরু। সেখানে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে যান কিম ইয়ো জং। বিভিন্ন কর্মসূচিতে শাসক কিমের পাশে এখন দেখা যাচ্ছে তাঁর স্ত্রী রি সোল জুকেও। গত মাসেই কিম চিন সফরে গিয়েছিলেন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে।
মুন জায়ে ইনের সঙ্গে আলোচনায় কিমের পাশে থাকতে পারেন স্ত্রী রি। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম তেমনই বলছে। তারা মনে করছে, কিম সব বজ্রকঠিন নীতি এখনই ঝেড়ে ফেলছেন, এমনটা না হলেও বাইরের জগতে তিনি যে নিজের ‘চেহারা’টা পাল্টাতে বেশ উদগ্রীব, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। এমনটা চললে হয়তো বা মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের পাশেও সহাস্য কিমের স্ত্রীকে দেখতে পাওয়া যাবে, ভাবছেন অনেকেই!