প্রতীকী ছবি
শতকোটি করোনাভাইরাসের কুলে এরা সপ্তম, যারা মানুষকে রোগে ফেলছে। প্রথম চারটি প্রতি শীতে সর্দিকাশির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে আক্রমণ। বাকি দু’টি হল সার্স ও মার্স। যা সীমিত সময়ে হানাদারি চালিয়েই আপাতত বিশ্রামে। কিন্তু সপ্তমটি বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে মানবজাতিকে।
ছ’মাস আগেও মানুষের শরীরে ছিল না এরা। আর এখন নোভেল করোনাভাইরাসের পাঠশালায় মাস চারেক ধরে কার্যত দিশাহারা অবস্থা বিজ্ঞানীদের। প্রথমে শ্বাসকষ্টের অসুখ মনে করা হলেও, দেশে দেশে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এই ভাইরাস পা থেকে মাথা, ফুসফুস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র, রক্তের কোষ, শরীরের যে কোনও অঙ্গেই থাবা বসাচ্ছে। রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দিচ্ছে। প্রথম দিকে এ সবের কোনও উপসর্গই থাকছে না। প্রবীণদের তো বটেই ছাড় দিচ্ছে না শিশুদেরও।
করোনায় সবচেয়ে আক্রান্ত ভারত-সহ বিশ্বের অর্থনীতি। উদ্বেগজনক এই পরিস্থিতিতে জয়পুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএচএমআর) একটি ইন্টারনেট-আলোচনাচক্র তথা ‘ওয়েবিনার’-এর আয়োজন করেছিল। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৭২২ জন তাতে অংশ নেন। সেখানেই জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যনীতি-কুশলী ডেভিড বিশাই হুঁশিয়ারি দেন, “দেড়-দু’বছরে নোভেল করোনাভাইরাস তথা সার্স-কোভ-২-এর প্রতিষেধক না-বেরোলে বিশ্বের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের মধ্যে রোগটা ছড়াবে। তাঁদের মধ্যে এর প্রতিরোধ-ক্ষমতা তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর হানাদারি থামবে না।”
বিশাইয়ের মতে, দেড়-দু’বছরে প্রতিষেধক হাতে না-এলে তার নিদারুণ প্রভাব পড়বে ভারতের অর্থনীতির উপরে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে না-মিলবে এর মোকাবিলার পরিকাঠামো, না-মিলবে উপযুক্ত সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী। বৎসোয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারাইন সিন্হার মূল চিন্তা ভারতের পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে। তাঁর কথায়, “ভারতের অর্থনীতিতে এরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এঁদেরই ৯২.৫ শতাংশ এক থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে কাজ খুইয়েছেন। স্থানীয় আর্থ-সামাজিক ও জনবসতির চরিত্র অনুযায়ী অবিলম্বে কোনও নীতি স্থির করা উচিত সরকারের।” অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ উজ্জ্বল ঠকরের বক্তব্য, “কোভিড-১৯ আমাদের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়টা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে। তা হল দারিদ্র।”
আরও পড়ুন: রোজার মাঝেই বৃদ্ধাকে পিঠে করে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলেন চিকিৎসা কর্মী