আতঙ্ক: টাউনসভিলের রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছে কুমির। ছবি: এএফপি।
রাত তখন প্রায় দশটা। বাবার বাড়িতে ছিলেন এরিন হান। টাউনসভিলের মানডিংবেরার এরেলি স্ট্রিটে থাকেন এরিনের বাবা শন। দরজার কাছে গিয়ে আঁতকে উঠেছিলেন এরিন। বাড়ির ঠিক সামনেই পার্কিং লটের কাছে তখন অতিকায় এক কুমির। এরিনের কথায়, ‘‘অন্তত সাড়ে ৬ ফুট লম্বা!’’ সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে সেটির ছবি তুলে ফেলেন এরিন। কিছু ক্ষণ পরে নিজে থেকেই উধাও হয়ে যায় সেই অতিকায় প্রাণী।
শুধু এরিন নন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড প্রদেশের টাউনসভিল শহরের বাসিন্দাদের কার্যত গ্রাস করেছে কুমির-আতঙ্ক। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বানভাসি এই শহরে এখন নতুন আতঙ্ক কুমির আর সাপের উপদ্রব। নদী আর হ্রদের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ডাঙায় উঠে পড়ছে বড় বড় কুমির। ঘোরাফেরা শুরু করেছে আশপাশের জনবসতিতে। আবহাওয়া দফতর আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে। তাই স্থানীয় লোকজনের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক। টাউনসভিলের পুলিশ ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষ করে রাস্তায় চলাফেরার ক্ষেত্রে সব বাসিন্দাকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
এরিন জানাচ্ছেন, তাঁর বাবার বাড়ির কাছে রস নদী। তাই সেখানে কুমির থাকা আশ্চর্য নয়। কিন্তু বাড়ির দোরগোড়ায় এ ভাবে তাদের আনাগোনায় আতঙ্কিত তিনি।
এরিনের মতোই আরও একটি ছবি এখন রীতিমতো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফিল স্ট্যালি নামে আর এক বাসিন্দা টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করেছেন। যাতে দেখা গিয়েছে, বন্যায় ভেসে যাওয়া রাস্তার পাশের একটি গাছে উঠছে কুমির। কুইন্সল্যান্ডের পরিবেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘রাস্তায় এখন যেখানে-সেখানে কুমির দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে বন্যার জল নামলে খামার বাড়ি বা জলের পাইপে ওরা লুকিয়ে থাকতে পারে।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সাপেরাও খুব ভাল সাঁতার কাটতে পারে।
আশ্রয়: বন্যায় চারদিক থইথই। তাই জল ছেড়ে গাছবাসী কুমির। কুইন্সল্যান্ডের টাউনসভিলে। ছবি: টুইটার
আচমকা ওদেরও দেখা যেতে পারে যেখানে-সেখানে।
আবহবিদেরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে ১ হাজার মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে টাউন্সভিলে। স্বাভাবিকের চেয়ে যা ২০ গুণ বেশি। আগামী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টি হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে যাতে আশপাশের নদী আর বাঁধের জলস্তর আরও বাড়তে পারে।