ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য তিনি চার-পাঁচ বার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। এবার নিজেই সেই নোবেল পুরস্কার চেয়ে বসছেন ট্রাম্প! সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, নরওয়ের একটি ব্যবসা সংক্রান্ত দৈনিকে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
‘ডাগেনস্ নায়েরিংস্লিভ’ নামে ওই দৈনিকের দাবি, জুলাই মাসে নরওয়ের বাণিজ্য মন্ত্রী জেন্স স্টলেনবার্গের সঙ্গে ফোনে শুল্ক নিয়ে আলোচনার সময় ট্রাম্প নিজেই জানান, তিনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার চান। এর আগে ইজ়রায়েল, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া নোবেল পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম মনোনীত করেছিল। এবার তিনি নিজেই সরাসরি নরওয়ের কাছে দাবি করলেন যে তিনি ‘নোবেল পাওয়ার যোগ্য’। যদিও প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক’ এক সূত্র মারফত। এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত নোবেল কমিটি বা হোয়াইট হাউসের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া য়ায়নি। তবে স্টলেনবার্গ বলেছেন, ‘‘নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুল্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য ট্রাম্পের ফোন এসেছিল।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘কথোপকথনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আর বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।’’
নরওয়ের নোবেল কমিটি প্রতি বছর অন্যান্য বিষয়ের মতো শান্তি পুরস্কারের জন্যও যোগ্য ব্যক্তির নাম নির্বাচিত করে। সম্ভবত তাই ট্রাম্প ঝুঁকি না নিয়ে সরাসরি সে দেশের মন্ত্রীকে নিজেই প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছেন!
অন্য দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে বৈঠকের আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানান, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। একটি বৈঠকের পরে পুতিন দাবি করেন, সব পক্ষের জন্য চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য বেশ উদ্যমী ও আন্তরিক চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। পুতিন আরও জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিযন্ত্রণেরও চুক্তি হতে পারে। যার ফলে বিশ্বব্যাপী দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আসতে পারে। ট্রাম্পের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর দেখা করার নেপথ্যে ‘সম্ভবত’ ভারতের শুল্কেরও ভূমিকা আছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আবারও দাবি করেছেন, ভারত-পাকিস্তান অশান্তির সময়ে তিনিই শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। তা না হলে ওই সংঘর্ষ গড়াতে পারত পরমাণু যুদ্ধ পর্যন্ত। যদিও ট্রাম্পের এমন দাবি আগেই উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সামাজিক নিরাপত্তার ৯০ তম বার্ষিক অনুষ্ঠানের এক বিজ্ঞপ্তি স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের সময়কালে বেশ কিছু পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানেই তাঁর দাবি, ২ লক্ষ ৭৫ হাজার ‘এলিয়েন’ অর্থাৎ অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ১২০ বছরেরও বেশি পুরনো ২৪ লক্ষ নাম ‘তথ্যভান্ডার’ থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। অবৈধ অধিবাসীদের যে ভাবে আমেরিকা থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অবৈধ অধিবাসীদের ট্রাম্প খোঁচা দিয়েছেন ‘এলিয়েন’ বলে।