US China Trade War

‘আমি প্রেসিডেন্ট জিনপিংকে পছন্দ করি, কিন্তু...’ বাণিজ্য-টানাপড়েনের মাঝে কোন ইঙ্গিত ট্রাম্পের

চলতি সপ্তাহেই হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে জানিয়েছেন, শীঘ্রই মুখোমুখি বৈঠকে বসতে পারেন আমেরিকা এবং চিনের প্রেসিডেন্ট। সেই আবহে ট্রাম্পের এই পোস্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ১৫:০৩
Share:

(বাঁ দিকে) শি জিনপিং। ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে তিনি পছন্দ করেন। তবে তাঁর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছোনো ‘খুবই কঠিন’। নিজের সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে বুধবার এমনটাই জানালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই টানাপড়েন চলছে। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহেই হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে জানিয়েছেন, শীঘ্রই মুখোমুখি বৈঠকে বসতে পারেন আমেরিকা এবং চিনের প্রেসিডেন্ট। প্রশ্ন উঠছে, শুল্ক নিয়ে দুই দেশের টানাপড়েনের মাঝে সেই সম্ভাবনাকেই কি খুঁচিয়ে তুললেন ট্রাম্প? তাঁর এই পোস্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ-ও মনে করা হচ্ছে, চিনের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছনো যে সহজ হবে না, সেই ইঙ্গিতও আসলে নিজের পোস্টে দিয়ে রেখেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

নিজেরই তৈরি সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘আমি চিনের প্রেসিডেন্ট শিকে পছন্দ করি। সব সময় করেছি, সব সময় করব। কিন্তু সমঝোতা করার জন্য তিনি খুব কঠিন এবং অত্যন্ত কঠিন।’’

আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরেই চলছে শুল্কযুদ্ধ। একে অন্যের পণ্যের উপর ক্রমেই শুল্ক চাপাতে থাকে দুই দেশ। গত ১২ মে সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় বৈঠকে বসে দুই দেশ। ৯০ দিনের জন্য দু’পক্ষই একে অন্যের পণ্যের উপর শুল্কের হার ১১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও তার পরেও টানাপড়েন কমেনি। ওয়াশিংটন দাবি করে, কিছু বিরল খনিজ রফতানির ক্ষেত্রে বিধি লঘু করেনি চিন। অন্য দিকে, আমেরিকার সমালোচনা করে চিন কটাক্ষ করে যে, আধুনিক প্রযুক্তি পেতে তাদের বাধা দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। তার মধ্যেই আমেরিকা সম্প্রতি কিছু চিনা পড়ুয়ার ভিসা তারা প্রত্যাহারের ঘোষণা করে।

Advertisement

এই আবহে গত শুক্রবার আমেরিকার রাজস্বসচিব স্কট বেসান্ত জানান যে, চিনের সঙ্গে তাদের আলোচনা এখন ‘স্থবির’ হয়েছে। ট্রাম্প এবং জিনপিং সরাসরি হস্তক্ষেপ করলে তবেই পরিস্থিতির জট কাটতে পারে। তার পরেই হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক এক সংবাদমাধ্যমকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, শীঘ্রই মুখোমুখি বৈঠকে বসতে পারেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। প্রশ্ন ওঠে, তবে কি চিনের সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে ফেলতে চান ট্রাম্প? যেমনটা শুল্ক চাপানোর পরেই নিজস্ব শর্ত চাপিয়ে অনেক দেশের ক্ষেত্রেই করেছিলেন ট্রাম্প!

তার পরেই মঙ্গলবার চিনে আমেরিকার নতুন রাষ্ট্রদূত ডেভিড পার্দুর সঙ্গে বৈঠক করেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং য়ি। পরে সেই নিয়ে বিবৃতি দেন তিনি। তা অনুযায়ী, ওয়াং পার্দুকে জানান, ‘কারণ ছাড়াই’ ট্রাম্প প্রশাসন চিনের বিষয়ে ‘নেতিবাচক পদক্ষেপ’ করছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সঠিক পথে চালিত করার জন্য দুই দেশের এগিয়ে আসা উচিত বলেও বিবৃতিতে জানান তিনি। পার্দুকে উদ্ধৃত করে সেই বিবৃতিতে আরও জানানো হয় যে, জিনপিংকে ‘শ্রদ্ধা’ করার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। প্রশ্ন উঠছে, দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মুখোমুখি বৈঠকেরই কি ভিত্তি স্থাপন করে রাখলেন ওয়াং এবং পার্দু? তার পরেই ট্রাম্পের পোস্ট সেই সম্ভাবনাকেই উসকে দিয়েছে। যদিও চিনের সঙ্গে বৈঠক যে মসৃণ ভাবে এগোবে না, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।

গত জানুয়ারি মাসে শেষ বার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প এবং জিনপিং। ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার আগে চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। সম্প্রতি ট্রাম্প জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে চিন প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়াশিংটন যদি নিশ্চিত করে যে, বৈঠকে আচমকা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না, তবেই ট্রাম্পের সঙ্গে বসবেন জিনপিং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement