কাতারের রাজধানী দোহা।- ফাইল চিত্র।
জঙ্গিদের সঙ্গে যোগসাজশ রাখা চলবে না। বন্ধ করতে হবে ‘আল জাজিরা’ টেলিভিশনের সম্প্রচারও।
এমন ১৩ দফা দাবি ১০ দিনের মধ্যে মেনে নিলে কাতারকে নিয়ে নতুন করে ভাবা হবে। আর তা না হলে, কাতারের সঙ্গে চার আরব দেশ যে যাবতীয় অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও যাতায়াতের সম্পর্ক সরকারি ভাবে ছিন্ন করেছিল ১৮ দিন আগে, তা বলবৎ থাকবে।
সামনে ১৩ দফা দাবি ঝুলিয়ে শুক্রবার এই ভাবেই কাতারকে আরব দুনিয়ার মূল স্রোতে ফেরার শেষ একটা সুযোগ দিল চারটি আরব দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মিশর ও বাহরাইন। মধ্যস্থতাকারী দেশ কুয়েতের মাধ্যমে কাতারের রাজধানী দোহায় ওই ১৩ দফা দাবি পাঠাল চারটি আরব দেশ। ওই দাবিসনদে বলা হয়েছে, আইএস, আল-কায়েদা, হিজবুল্লা ও জভাত ফতেয়া আল-শামের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে কোনও ভাবেই কোনও রকম সম্পর্ক রাখতে পারেব না কাতার। পরোক্ষে বা সরাসরি তাদের অর্থসাহায্য করতে পারবে না। আরব দুনিয়ার ‘শত্রু দেশ’ ইরানের সঙ্গে ভাবসাব কমিয়ে আনতে হবে কাতারকে। চার আরব দেশের অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতিতে নাক গলানোর চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। ওই চার আরব দেশের নাগরিককে কাতারের যথেচ্ছ নাগরিকত্ব দেওয়ার ‘অভ্যাস’টাও ছাড়তে হবে। কাতারে যে সামরিক ঘাঁটি আছে তুরস্কের, সেটাও পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে।
আর এই ১৩ দফা দাবি যে কাতার মেনে নেবে, সেই অঙ্গীকারটা দোহাকে করতে হবে আগামী ১০ দিনের মধ্যেই। তা না করতে পারলে, ওই দাবিগুলি জানানোর আর প্রয়োজন হবে না চারটি আরব দেশের। এখন যেমন চলছে, সেই ভাবেই কাতারের সঙ্গে আর কোনও রকম অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও যাতায়াতের সম্পর্ক রাখবে না ওই চারটি আরব দেশ- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মিশর ও বাহরাইন।
আরও পড়ুন- ধ্বংস ধেয়ে এল বলে! দ্রুত পৃথিবী ছাড়ুন, হুঁশিয়ারি হকিংয়ের
চার-চারটি ধনী আরব দেশের দেওয়া এই ‘শেষ সুযোগ’-এর সদ্ব্যবহার করতে কতটা ইচ্ছা রয়েছে কাতারের, তা অবশ্য খুব স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। ওই ১৩ দফা দাবি মেনে নিতে দোহা যে একেবারেই নারাজ, শুক্রবার অন্তত তা দ্বর্থ্যহীন ভাবে জানাননি কাতারের বিদেশমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থামানি। তবে চারটি আরব দেশের দাবি যে এখনই মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না দোহার, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘তার আগে আমাদের সঙ্গে যে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও যাতায়াতের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ওই দেশগুলি, তা তুলে নিক। তখন আমরাও ভাবব।’’
আরব দুনিয়ার রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, কাতারকে আদতে কোনও সুযোগ দেয়নি চারটি আরব দেশ। কিন্তু কাতারকে বয়কটের পরেও যে তার সামনে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, ওই ১৩ দাবি ১০ দিনের মধ্যে মেটানোর অঙ্গীকার আদায় করে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তিটা ধরে রাখতে চেয়েছে চারটি আরব দেশ। কাতারের পক্ষে তা কোনও ভাবে সম্ভব হবে না জেনেই!