International News

২০ বছরের মধ্যে অর্ধেক পৃথিবী অপুষ্টির কবলে! সতর্ক করল রাষ্ট্রপুঞ্জ

আর ২০ বছরের মধ্যেই গোটা পৃথিবী জুড়ে মহামারীর রূপ নিতে চলেছে অপুষ্টি। রাষ্ট্রপুঞ্জ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ইউএনএফএও) তরফে বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৯:২৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

আর ২০ বছরের মধ্যেই গোটা পৃথিবী জুড়ে মহামারীর রূপ নিতে চলেছে অপুষ্টি। রাষ্ট্রপুঞ্জ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ইউএনএফএও) তরফে বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ব জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগই অপুষ্টির শিকার। স্থূলতা এবং অনাহার— এই দু’ধরনের অপুষ্টিই যে ভাবে দ্রুত ছড়াচ্ছে, তা রুখতে বিভিন্ন দেশের সরকার সচেষ্ট না হলে, ২০৩৫ সালের মধ্যে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষই অপুষ্টির কবলে পড়বেন, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

অপুষ্টির সঙ্গে যুঝতে কোন পথে এগনো দরকার, তা নিয়ে আলোচনা করতে সম্মেলন আয়োজিত হয়েছিল ইতালির রোমে। সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অপুষ্টি রুখতে অবিলম্বে যদি সক্রিয় না হয় সরকারগুলি, তা হলে এর মহামারীর আকার নেওয়া আটকানো যাবে না। সমীক্ষা বলছে, এই মুহূর্তে পৃথিবীর জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। ৮০ কোটি মানুষ অনাহারক্লিষ্ট, না খেয়ে বা এক বেলা খেয়ে দিন কাটছে তাঁদের। আর ১৯০ কোটি মানুষ স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজনের শিকার, যে স্থূলতা আসলে বেহিসেবি খাদ্যগ্রহণ বা উপযুক্ত পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যতালিকার অভাবজনিত। অর্থাৎ দু’ধরনের অপুষ্টি মিলিয়ে এই মুহূর্তে প্রায় ২১০ কোটি মানুষ অপুষ্টির শিকার এই মুহূর্তে। আর পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ৭৫০ কোটির আশেপাশে।

রোমে আয়োজিত আন্তর্জাতিক পুষ্টি সম্মেলনে ইউএনএফএও-র মহানির্দেশক হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা বলেছেন, ‘‘সকলের পুষ্টি সুনিশ্চিত করার বিষয়টিকে একটি রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা হিসেবেই দেখতে হবে।’’ আমেরিকার টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ফ্রিডম্যান স্কুল অব নিউট্রিশন সায়েন্স অ্যান্ড পলিসিতে নিউট্রিশনের অধ্যাপক প্যাট্রিক ওয়েব রোমের এই সম্মেলনের অন্যতম প্রধান বক্তা ছিলেন। তাঁর মতে, বিভিন্ন দেশের সরকারকে পুষ্টিকর খাদ্যের উৎপাদন এবং কৃষি সংক্রান্ত গবেষণায় ভর্তুকি বাড়াতে হবে। অধ্যাপক ওয়েব জানিয়েছেন, কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে ভর্তুকি অনেক দেশই দেয়। কিন্তু মূলত ধান, গম সহ নানা খাদ্যশস্যের উৎপাদনেই সেই অর্থ ব্যয় করা হয়। কিন্তু এই অর্থ ফল, সব্জি, ডালের মতো উচ্চমাত্রায় পুষ্টিকর খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর পিছনে ব্যয় হওয়া উচিত বলে তাঁর মত। অধ্যাপক প্যাট্রিক ওয়েব সম্মেলনে জানিয়েছেন, শুধু মানুষের পেট ভরানোটা লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর আহারটাই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে এবং নাগরিকদের সঠিক পুষ্টি ও শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে প্রত্যেক দেশের সরকারেই উদ্যোগী হওয়া দরকার, সম্মেলনে এমনই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: যখন তখন ফল, ভাত, দুধ খান? সাবধান হোন

এই মুহূর্তে পৃথিবীতে পুষ্টি সংক্রান্ত সমস্যা যতটা রয়েছে, তার জন্য প্রতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি সাড়ে তিন লক্ষ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এখনই রাষ্ট্রগুলি সতর্ক না হলে এই ক্ষতি আরও অনেক বাড়তে চলেছে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে সতর্ক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন