নিহত তিন তরুণী। ছবি: সংগৃহীত।
মাদক মাফিয়াদের হাতে তিন তরুণীর খুনের ঘটনায় উত্তাল আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেস। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে শনিবার শয়ে শয়ে মানুষ ন্যায়বিচারের দাবিতে রাজধানীর পথে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, লারা, ব্রেন্ডা এবং মোরেনা নামে তিন তরুণীর উপর নারকীয় অত্যাচারের পর খুন করে মাদক মাফিয়ারা। পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিন জন। গত বুধবার বুয়েনস আইরেসের দক্ষিণ শহরতলিতে একটি বাড়ির উঠোন থেকে লারা ব্রেন্ডা এবং মোরেনার দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, তাঁদের খুন করে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো তাদের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, তরুণীদের অত্যাচারের পর খুন করা হচ্ছে। আর সেই ভিডিয়ো ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ করা হয়।
সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বুয়েনস আইরেস। তিন তরুণীর খুনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তাঁদের আত্মীয় থেকে শয়ে শয়ে সাধারণ মানুষ। তাঁরা আর্জেন্টিনার পার্লামেন্ট পর্যন্ত মিছিল করেন। দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী প্যাট্রিসিয়া বুলরিচ জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তিন জন পুরুষ এবং দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তের এখনও হদিস মেলেনি। পুলিশ প্রশাসন মূল অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ করেছে। তিনি পেরুর বাসিন্দা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর একটি পার্টিতে যাওয়ার সময় তিন তরুণীকে অপহরণ করা হয়। পুরোটাই পরিকল্পনামাফিক করা হয়েছে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। মাদকপাচার সংক্রান্ত কিছু তথ্য ফাঁস করার জন্য তিন তরুণীকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ব্রেন্ডা এবং মোরেনার এক তুতো ভাই ফেডেরিকো সেলেবন সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, অল্পবয়সি অনেক মেয়েই নিজেদের বেঁচে থাকার রসদ খুঁজতে যৌনকর্মী হিসাবে কাজ করেন। অনেকে আবার মাদকপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তবে তাঁর বোনেরা সে রকম কোনও ফাঁদে পড়েছিলেন না কি না, তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন ফেডেরিকো। যদিও লারার কাকিমা মাদক এবং যৌনকর্মীর বিষয়টি অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেছেন যে, বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু সেগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বিচার চাই। সত্যিটা যাতে প্রকাশ্যে আসে তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। যাঁরা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।’’