পরাগ হাভলদার। ছবি: সংগৃহীত।
আইআইটি-তে পড়ার সময় থেকেই ‘ইমেজ’ নিয়ে খেলতেন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে উচ্চশিক্ষাতেও সেই ‘ইমেজ’ নিয়ে নাড়াচাড়া। এ বার সেই ‘ইমেজ’কে জীবন্ত করার কারিকুরির জোরে অস্কার জুটল পরাগ হাভলদারের।
আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি এক অনুষ্ঠানে পরাগের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অস্কার কমিটির সদস্যরা। অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর তরফে জানানো হয়েছে, এক্সপ্রেশন বেসড ফেসিয়াল পারফরম্যান্স টেকনোলজিতে তাঁর অবদানের জন্য এই শিরোপা পরাগের।
আরও পড়ুন
ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা পরাগের কারিগরি শিক্ষার শুরুটা হয়েছিল খড়্গপুরের আইআইটি-তে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক করেছিলেন ১৯৯১-এ। এর পর উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি। ১৯৯৬-এ সার্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ভিশন অ্যান্ড গ্রাফিক্সে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ। এর পর থেকে কম্পিউটার গ্রাফিক্স নিয়েই মেতে রয়েছেন তিনি। থ্রি-ডি অ্যানিমেশন সিনেমায় বহু উল্লেখযোগ্য কাজ করে দেখিয়েছে হলিউড। তবে তা কতটা জীবন্ত সেটাই আসল কথা।
মুখের ভাব অনুযায়ী ইমেজ নড়াচড়া করানোয় অভূতপূর্ব উন্নতি করে দেখিয়েছেন ইন্দো-মার্কিন পরাগ ও তাঁর গবেষক দলের সদস্যরা। আগামী মাসের ২৬ তারিখের মূল অনুষ্ঠানের আগে বেভারলি হিলসে এই টেকনিক্যাল অস্কার পাচ্ছেন পরাগ-সহ আরও ১১ জন।
পরাগের কাজের নমুনা মিলেছে অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড, মনস্টার হাউস, হ্যানকক, দ্য আমেজিং স্পাইডারম্যান, গ্রিন ল্যান্টার্ন-এর মতো সিনেমায়। নব্বইয়ের দশকের সেই মেধাবী ছাত্রের এই গৌরবে উচ্ছ্বসিত তাঁর এক সময়কার শিক্ষক পি পি চক্রবর্তী। আইআইটি খড়্গপুরের ডিরেক্টর ও পরাগের প্রথম সেমেস্টারের প্রোগ্রামিং শিক্ষক বলেন, “এখানে প্রোজেক্টের কাজ করার সময় থেকেই ইমেজ প্রসেসিং নিয়ে পরাগের আগ্রহ জন্মায়। আর অস্কারের মাধ্যমে সেই টেকনিক্যাল আর্ট-ই স্বীকৃতি পেল।” পরাগের ছাত্রজীবনের কথা মনে করালেন বি টেক-এর প্রোজেক্ট গাইড প্রতিম দাস। তিনি বলেন, “পড়াশোনা নিয়ে খুব আন্তরিক ছিল পরাগ। বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকত সব সময়। প্রোডাক্ট ডেভেলপার হওয়ার সব রকম লক্ষণই ছিল তাঁর।” শুধুমাত্র তাঁর শিক্ষকরাই নন, ফেসবুক উপচে পড়ছে পরাগের হস্টেলের বন্ধুদের অভিনন্দন বার্তায়।