US Citizenship

ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত কার্যকরের আগে আমেরিকায় সন্তানের জন্ম দেওয়ার চিন্তা! দ্রুত সিজ়ার চাইছেন ভারতীয় দম্পতিরা

আমেরিকার নাগরিকত্বের নিয়ম বদলে ফেলছে ট্রাম্পের প্রশাসন। নতুন নিয়মে কোনও শিশু আমেরিকায় জন্মানো মানেই, সে আর আমেরিকার নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে না। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৩
Share:

ট্রাম্পের নির্দেশ অভিবাসী ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি করেছে। ছবি: পিটিআই

আমেরিকায় সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করতে সিজ়ারের জন্য তাড়াহুড়ো পড়ে গিয়েছে ভারতীয় দম্পতিদের মধ্যে। টেক্সাস, নিউ জার্সি- সহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে এই ছবি ধরা পড়েছে। চিকিৎসকদের কাছে ঘন ঘন ফোন আসছে প্রসূতি এবং তাঁদের পরিবারের। তাঁরা চাইছেন ২০ ফেব্রুয়ারির আগে সিজ়ার করে সন্তানের জন্ম দিতে।

Advertisement

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েই সে দেশে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নিয়মবিধি বদলে ফেলতে পদক্ষেপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বদলে ফেলা হচ্ছে ১৫৬ বছরের আইন। এত দিন আমেরিকায় জন্মালেই সেই শিশু আমেরিকার নাগরিকত্ব পেয়ে যেত। নয়া আইনে আমেরিকায় জন্মালেই আর সে দেশের নাগরিক হওয়া যাবে না! ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই বিধি কার্যকর হবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সে দেশে জন্মানো শিশুরা আমেরিকার নাগরিক হয়ে ভূমিষ্ঠ হবে। অনুমান করা হচ্ছে, সেই কারণেই ভারতীয় দম্পতিদের মধ্যে এই তাড়াহুড়ো।

নিউ জার্সির এক চিকিৎসক এসডি রাম জানাচ্ছেন, তাঁর কাছে সিজ়ারের জন্য ফোন অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুসারে, আট-নয় মাসের প্রসূতিরা ওই চিকিৎসকের কাছে ঘন ঘন ফোন করছেন। কেউ কেউ তো কয়েক মাস বাকি থাকতেই ফোন করছেন। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান প্রসবের জন্য যোগাযোগ করছেন কেউ কেউ। এক প্রসূতির সন্তান প্রসব হওয়ার কথা মার্চ মাসে। তিনিও এত দিন অপেক্ষা করতে চাইছেন না।

Advertisement

টেক্সাসের এক চিকিৎসক এসজি মুক্কলের কাছেও অনেক প্রসূতির ফোন আসছে। গত দু’দিনে মুক্কলের সঙ্গে প্রায় ২০ জন প্রসূতি যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ চাইছেন সময়ের আগেই সিজ়ার করিয়ে সন্তানের জন্ম দিতে। চিকিৎসকেরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, এ রকম করলে সন্তানের সমস্যা হতে পারে। কম ওজনের সন্তানের জন্ম হওয়া কিংবা সন্তানের ফুসফুস সম্পূর্ণ গঠিত না হওয়ার মতো সম্ভাব্য সমস্যার বিষয়ে চিকিৎসকেরা বোঝাচ্ছেন দম্পতিদের। আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়ে জন্মানো শিশুদের বয়স যখন ২১ বছর পূর্ণ হবে, তখন বাবা-মায়েরও আমেরিকায় থাকার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়। এই সুযোগটি বন্ধ করতে চান ট্রাম্প।

বস্তুত, ১৮৬৮ সালে আমেরিকার সংবিধানে ১৪তম সংশোধনী যোগ করা হয়। সেখানে বলা হয়, আমেরিকায় জন্মালেই সেখানকার নাগরিকত্ব মিলবে। ১৯৫২ সালের অভিবাসন এবং জাতীয়তা আইনেও একই কথা বলা হয়েছে। এই ধারারই বিরোধিতা করেছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি করেছেন। ওই নির্দেশিকা অনুসারে, কোনও শিশু আমেরিকায় জন্মালেও যদি তার মা বেআইনি ভাবে সে দেশে বসবাস করেন এবং বাবা আমেরিকার নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা (পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট) হন, তা হলে তাকে নাগরিকত্ব দেবে না আমেরিকা। কোনও শিশুর মা আইনি কিন্তু অস্থায়ী ভাবে যদি আমেরিকায় থাকেন বা পড়ুয়া অথবা পর্যটন ভিসায় আমেরিকায় থাকেন এবং বাবা যদি নাগরিক না হন, তা হলে এ দেশে জন্মালেও সেই শিশু নাগরিকত্ব পাবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement