গুলি করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে পাকিস্তানি যুবককে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে, এমনই অভিযোগ তুললেন এক ভারতীয় যুবতী। শুধু তাই নয়, তাঁর পাসপোর্ট এবং ভিসাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে রবিবার ইসলামাবাদ আদালতে জানিয়েছেন উজমা নামে বছর কুড়ির ওই যুবতী।
সম্প্রতি ভিজিটর ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে সে দেশে গিয়েছিলেন উজমা। উজমার অভিযোগ, এখানেই জোর করে তাঁকে বিয়ে করেছেন তাহির আলি নামে এক পাকিস্তানি যুবক। পাশাপাশি তাঁকে যৌন হেনস্থাও করা হয়েছে বলে জানান ওই যুবতী। খুব শীঘ্রই দেশে ফিরে যাওয়ার আবেদন নিয়ে এর পরেই ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের দ্বারস্থ হন উজমা। নিরাপদে দেশে ফিরতে না পারা পর্যন্ত দূতাবাসেই আশ্রয় নিয়েছেন উজমা।
এ দিনের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না তাহির আলি। তবে আলির বাবা নাজির উর রহমান জানান, গত ৩ মে বুনার জেলার দাগ্গারে তাঁর ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল উজমা-র। এমনকী, নাজিরের দাবি, আলির আগের বিয়ে এবং প্রথম পক্ষের চার সন্তান সম্পর্কেও অবগত ছিলেন উজমা। তিনি নিজের ইচ্ছেতেই বিয়ে করেছিলেন।
আরও পড়ুন: আইএসের আফগান প্রধান আব্দুল হাসিব খতম
পাকিস্তান সরকার সূত্রে খবর, পাকিস্তানে এসে বিয়ে করার পরিকল্পনা ছিল উজমার। তবে সে সম্বন্ধে তিনি কাউকে কিছু জানাননি। উজমা জানিয়েছিলেন, আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্যই পাকিস্তানে যাচ্ছেন তিনি। এমনকী উজমার ভিসাতেও তাঁর আত্মীয় হিসাবে হবু শ্বশুর রহমানের নামই লেখা ছিল। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নফিজ জাকারিয়া জানান, এ বিষয়ে ভারতের হাইকমিশনার পাক বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। উজমাকে দেশে ফেরানোর আবেদনও করেছে ভারত।
সম্প্রতি স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন উজমার স্বামী আলিও। তিনি জানান, ৫ মে ভারতীয় দূতাবাসে ভাইয়ের ভিসা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন উজমা। কিন্তু দূতাবাস থেকে আর ফেরেননি তাঁর স্ত্রী। তিনি অভিযোগ তোলেন, ভারতীয় দূতাবাসে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে আটকে রাখা হয়েছে উজমাকে। পুলিশের কাছে তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধারের আবেদনও জানান আলি। তবে দূতাবাসে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এলেও আদালতের শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন আলি। বহু বার চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সূত্রের খবর, মালয়েশিয়ায় গিয়ে দেখা হয়েছিল আলি ও উজমার। সেখানে ট্যাক্সিচালকের কাজ করতেন আলি। আলিকে বিয়ে করার জন্যই ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পয়লা মে পাকিস্তানে এসেছিলেন ওই যুবতী। ৩ মে আলিকে বিয়ে করেছিলেন উজমা। দূতাবাসের কাছে উজমা জানান, আলি যে বিবাহিত এবং তাঁর চারটি সন্তান রয়েছে এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তিনি। আলি ও উজমার বিয়ের নথিতেও দেখা গিয়েছে, পুরো নাম স্বাক্ষর করেছেন উজমা। উর্দুতে লেখা সেই নথিতে ‘ডক্টর উজমা’ নামে স্বাক্ষর করেছেন ওই যুবতী।