Arora Akanksha

৭১ বনাম ৩৪-এর লড়াই, রাষ্ট্রপুঞ্জের সর্বোচ্চ পদের দৌড়ে ভারতীয় কন্যা অরোরা আকাঙ্ক্ষা

৬ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে সৌদি আরব পাড়ি দেন। অনাবাসী হিসেবে ভারতের নাগরিকত্ব থাকার পাশাপাশি কানডার পাসপোর্টও রয়েছে আকাঙ্ক্ষার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউইয়র্ক শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:০৩
Share:

অরোরা আকাঙ্খা। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে এ বার ভারতীয় বংশোদ্ভূত কন্যা। সংগঠনের বর্তমান মহাসচিব অ্যান্টোনিয়ো গুতারেসের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন ৩৪ বছরের অরোরা আাকাঙ্ক্ষা। রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি বলেই তাঁকে আসরে নামতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আকাঙ্ক্ষা। নেটমাধ্যমে #অরোরাফরএসজি প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

২০১৭-র ১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অ্যান্টোনিয়ো গুতারেস। এ বছর ৩১ ডিসেম্বর তাঁর ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় বারের জন্যও মনোনয়নপত্র জমা দিতে চলেছেন ৭১ বছর বয়সি গুতারেস। সরাসরি তাঁকেই টক্কর দিতে চলেছেন আকাঙ্ক্ষা। প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে পারলে রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মহিলাকে মহাসচিব পদে দেখা যাবে।

এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপুঞ্জেই কর্মরত আকাঙ্ক্ষা। রাষ্ট্রপুঞ্জের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) বিভাগে অডিট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিযুক্ত তিনি। নিজের পক্ষে সমর্থন টানতে আড়াই মিনিটের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন আকাঙ্ক্ষা। তাতে তিনি বলেন, ‘‘আমার মতো পরিস্থিতিতে থাকা মানুষরা সাধারণত ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে মাথা তোলার সাহস দেখান না। মাথা নিচু করে কাজ করে যাই। সব কিছু যেমন চলছে মেনে নিই। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল, এত বছরেও তা সফল হয়নি। বছরের পর বছর যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের হাতে রাষ্ট্রপুঞ্জ ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে।’’

Advertisement

আকাঙ্ক্ষা আরও বলেন, ‘‘গত ৭৫ বছরেও বিশ্বকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপুঞ্জ। শরণার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি, অত্যন্ত কম সংখ্যক মানুষের কাছেই সাহায্য পৌঁছে দিতে পেরেছে। প্রযুক্তি এবং নতুন চিন্তাভাবনার নিরিখেও পিছিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই মুহূর্তে এমন একটা রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রয়োজন, যা গোটা বিশ্বকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জে মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে নাম লিখিয়েছি আমি। শুধুমাত্র নীরব দর্শক হয়ে থাকতে রাজি নই। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই অক্ষমতা, সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে রাজি নই একেবারেই।’’

নিজের ভারতীয় পরিচয় যদিও ওই ভিডিয়োয় তুলে ধরতে দেখা যায়নি আকাঙ্ক্ষাকে। তবে ভারতেই তাঁর জন্ম। ৬ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে সৌদি আরব পাড়ি দেন। পরবর্তী কালে কানাডার টরন্টোর ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক বিষয়ে পড়াশোনা করেন। নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই বিষয়েই স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা শেষ করেন। অনাবাসী হিসেবে ভারতের নাগরিকত্ব থাকার পাশাপাশি কানডার পাসপোর্টও রয়েছে আকাঙ্ক্ষার। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জে তাঁর হয়ে সুপারিশ করার জন্য দু’টি দেশের মধ্যে কারও কাছেই আবেদন জানাননি তিনি। তবে শতাব্দী-প্রাচীন চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর মতো নতুন প্রজন্মের হাতেই আন্তর্জাতিক সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পক্ষে সমর্থনের অভাব হবে না বলে আত্মবিশ্বাসী আকাঙ্ক্ষা।

নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ মেনে সাধারণসভা রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবকে বেছে নেন। তবে এ ক্ষেত্রে ব্রিটেন, চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং আমেরিকার মতো দেশ, যারা রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থায়ী সদস্য, তারা ভেটো প্রদান করে কারও নিয়োগে আপত্তি জানাতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই প্রার্থীর নিয়োগ আটকে যেতে পারে। তাই ভেটো প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে যাদের, তাদের আস্থাও অর্জন করতে হবে আকাঙ্ক্ষাকে। তবেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সর্বোচ্চ পদে দেখা যেতে পারে তাঁকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন