প্রচার: গর্ভপাত বিরোধী আইন লঘু করার দাবিতে সরব। ছবি: রয়টার্স।
ঘটনাটি ২০১২ সালের। আয়ারল্যান্ডের কড়া গর্ভপাত বিরোধী আইনের চক্রব্যূহে পড়ে প্রাণ হারান সবিতা হলপ্পনাবার নামে ৩১ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক চিকিৎসক। সবিতার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ১৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সবিতার গর্ভপাত করানোর অনুরোধ জানিয়েছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের মতো ক্যাথলিক দেশে ভ্রূণ বেঁচে থাকতে গর্ভপাত করানোর অনুমতি মেলেনি। মারা যান সবিতা।
প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল দেশ জুড়ে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গর্ভপাত করাতে হলে লুকিয়ে বিদেশে পালানো ছাড়া কোনও উপায়ই নেই। বিভিন্ন সময়ে এই গর্ভপাত বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে জনতা। চাপের মুখে পড়ে গণভোটের আয়োজন করতে বাধ্য হয় সরকার। আন্দোলনকারীদের দাবি, গর্ভধারণের ১২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করানোর অধিকারে আইনি সম্মতি দেওয়া হোক। স্বাস্থ্যগত কারণ থাকলে তা করা হোক ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত।
আজ সেই গণভোটে অংশ নিতে এগিয়ে এসেছিলেন ৩২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। ভোট গণনা হবে শনিবার। রবিবার সকালের মধ্যেই ফলাফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ক্যাথলিক দেশ আয়ারল্যান্ডের ১৯৮৩ সালের অষ্টম সাংবিধানিক সংশোধনী অনুযায়ী মা এবং গর্ভস্থ শিশু দু’জনেরই বাঁচার সমান অধিকার রয়েছে। গর্ভপাত করালে ১৪ বছরের জেল এবং জরিমানাও হতে পারে। ফলে ধর্ষণের কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়লেও যেমন গর্ভপাতের অনুমতি মেলে না, গর্ভস্থ শিশুর কোনও রকম অসুস্থতা বা অস্বাভাবিকতার ক্ষেত্রেও তাই। এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, দেশে এই কড়াকড়ির কারণে ১৯৮০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দেড় লাখেরও বেশি মহিলা বিদেশে গিয়ে গর্ভপাত করিয়েছেন।
গর্ভপাত নিয়ে এই আইন বদল হবে কি না, তা পুরোটাই নির্ভর করছে গণভোটের ফলাফলের উপর। তবে নতুন আইন আনার পক্ষে বেশি ভোট পড়লেও তা পুরোপুরি কার্যকর হবে পার্লামেন্টের অনুমোদন মিললেই।