ভোটটা ছিল বিচ্ছিন্নতাকামীদের কোণঠাসা করতে। রেকর্ড ভোটও পড়েছিল গত কাল— ১০০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। কিন্তু আজ ফল বেরোতেই তা ব্যুমেরাং হয়ে গেল মাদ্রিদের কাছে। ক্যাটালোনিয়ার প্রাদেশিক সরকার গঠনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা গেল কার্লেস পুইজডেমনদের ঝুলিতেই। ১৩৫টির মধ্যে ৭০টি আসনই পেয়েছে স্বাধীনতাকামীদের জোট।
আবারও স্পষ্ট হয়ে গেল, স্পেন থেকে আলাদাই হতে চাইছে ক্যাটালোনিয়া।
মাস দুয়েকের ব্যবধানে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মুখ পুড়ল স্পেনের। প্রথমটা ছিল ১ অক্টোবরের গণভোটে। যা ভেস্তে দিতে কার্যত জান লড়িয়ে দিয়েছিল মাদ্রিদের সেনা, পুলিশ। তবু ভোট দিয়েছিল ক্যাটালোনিয়া। প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে স্বাধীনতা ঘোষণাও করে বসেন ক্যাটালোনিয়ার তৎকালীন প্রাদেশিক প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুইজডেমন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ওই গণভোট অবৈধ বলে স্বায়ত্তশাসন কে়ড়ে নিয়ে প্রদেশটির দখল নেয় স্পেন। ভেঙে দেওয়া হয় প্রাদেশিক পার্লামেন্ট। গ্রেফতারি এড়াতে বেলজিয়ামে গিয়ে স্বেচ্ছা নির্বাসন নেন পুইজডেমন।
আজ ভোটে স্বাধীনতাকামীদের পাল্লা ভারী হতেই স্পেনকে ফের আলোচনায় ডাক দিয়েছেন পুইজডেমন। তাঁর কথায়, ‘‘ক্যাটালোনিয়া যে স্বাধীনতার দাবিতে অনড়, এই সহজ কথাটাই বুঝতে পারছেন না স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাহয়। অথবা বুঝতে চাইছেন না। আর ঠিক সেই কারণেই একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন তিনি। এ বার অন্য ভাবে সমাধানের রাস্তা খুঁজতে হবে।’’
যদিও সমাধান আদৌ মিলবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ। অর্থনৈতিক দিক থেকে ব্যাপক সমৃদ্ধ ক্যাটালোনিয়াকে কোনও ভাবেই আলাদা হতে দিতে
চায় না মাদ্রিদ। এ দিকে পুইজডেমনরাও নাছোড়। বিচ্ছিন্নকামী নেতাদের বেশির ভাগই হয় জেলে, জামিনে মুক্ত বা নির্বাসিত। রাস্তায় নেমে স্বাধীনতার পক্ষে প্রচার প্রায় হয়নি বললেই চলে। তার পরেও ভোটের এমন ফল চিন্তায় ফেলে দিয়েছে স্পেনকে। মাদ্রিদ চেয়েছিল, ক্যাটালোনিয়ার জনগণই ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে উচিত শিক্ষা দিক বিচ্ছিন্নতাকামীদের। অক্টোবরের গণভোটে যে হেতু অর্ধেকেরও বেশি ভোট প়ড়েনি, তাই কালকের ভোটটাকেই শেষ বাজি ধরেছিলেন রাহয়। কিন্তু এখন কী হবে?
ক্যাটালোনিয়ায় কারা আসছে ক্ষমতায়, তা এখনও স্পষ্ট করেনি মাদ্রিদ। তবু ভোটের ফল বেরোতেই আজ বিজয়মিছিলে নেমে পড়েন স্বাধীনতাকামীরা। পোস্টার-ব্যানার বলছে, ফের পুইজডেমনকেই প্রেসিডেন্ট চাইছে ক্যাটালোনিয়া।