এ সপ্তাহে কিম জং উন যে ট্রেনে চড়ে বেজিংয়ে গিয়েছিলেন, সেটির সঙ্গে তাঁর বাবার জমানার ট্রেনের হুবহু মিল!
প্রয়াত শাসক কিম জং ইল এমন ট্রেনেই দেশ-বিদেশ সফরে স্বচ্ছন্দ ছিলেন কারণ তিনি আকাশপথে ভয় পেতেন। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া জলপাইরঙা ওই ট্রেনে হলুদ রং দিয়ে লম্বা দাগ টানা থাকত। তাতে চড়ে ১৯৯৪-২০১১ সালের শাসনকালে কিমের বাবা সাত বার চিন সফরে যান। আর রাশিয়ায় যান তিন বার। গোটা ট্রেন ইস্পাতের পাতে মোড়া এবং বুলেটপ্রুফ। এত ভারী বলে গতিবেগ কখনওই ঘণ্টার ৬০ কিলোমিটারের বেশি হয় না। জরুরি অবস্থার কথা ভেবে সশস্ত্র অন্য যান এবং হেলিকপ্টারও থাকে ট্রেনে!
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সূত্রে দাবি, এমন ট্রেনেই ২০১১ সালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কিম জং ইল। কিম শাসকদের হেফাজতে এক রকম দেখতে এই ধরনের বেশ কয়েকটি ট্রেন আছে। পিয়ংইয়ংয়ের বিশেষ কারখানায় তৈরি হয় সেগুলো। রাষ্ট্রনেতার সফরের সময় তিনটি ট্রেন এক সঙ্গে যায়। সামনে থাকে যেটি, সেটি রেললাইন পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকে। মাঝেরটিতে থাকেন শাসক আর তাঁর আধিকারিকরা। একেবারের শেষে আর একটি ট্রেন, বাকি প্রতিনিধিদের জন্য। কিমের ঠাকুরদা কিম ইল সাং-ও এই ভাবেই সফর করতেন। ১৯৮৪ সালে পূর্ব ইউরোপ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন ট্রেনকে।
এখন ওই ট্রেনে আছে বিনোদনের সব সামগ্রী। ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি, সম্মেলন কক্ষ, শোয়ার সুবন্দোবস্ত মজুত সবই। খানা-পিনা-নাচা-গানা— প্রয়োজনে ব্যবস্থা হয় তারও। জ্যান্ত চিংড়ি এবং পোড়া শুয়োরের মাংস মেনুর অন্যতম পদ। কিম জং ইল যে বার রাশিয়া যান, সংবাদমাধ্যম কাছে ঘেঁষতে পায়নি। এ বারের ঘটনা একেবারেই আলাদা। কিম জং উনের বেজিং সফরের অনেকটাই ফাঁস হয়ে যায়, ট্রেনের যাত্রীদের তোলা ঢালাও মোবাইল ছবি ও ভিডিয়োর দৌলতে।