লক্ষ্যমাত্রা, নিখুঁত লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা, ফায়ার পাওয়ার, পেনিট্রেশন— সবমিলে নির্ধারিত হয় সেরা স্নাইপার রাইফেল। অমানুষিক পরিশ্রম করে প্রশিক্ষণ নেন একেকজন স্নাইপার। স্নাইপার রাইফেল ও ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন।
স্নাইপার শব্দের উৎপত্তি স্নাইপ পাখির থেকে। ১৭৭০ সাল নাগাদ এই শব্দটা প্রথম চালু হয়।
ব্যারেট এম৮২: সেমি অটোমেটিক, অ্যান্টি মেটেরিয়াল রাইফেল। আশির দশকে এই রাইফেলের প্রথম ব্যবহার শুরু হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী ও সুইডেনের সশস্ত্র বাহিনীতে প্রথম ব্যবহার হয় এর। চার কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যভেদে সক্ষম এই রাইফেল।
ব্রিটিশ সুপার স্নাইপার ক্রেগ হ্যারিসন প্রায় আড়াই কিমি দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করে রেকর্ড করেন। প্রথম দীর্ঘতম ‘স্নাইপার কিলিং’ বললে ২০০৯ সালের নভেম্বরের আফগানিস্তানের এই ঘটনাকেই ধরা হয়।
৩.৫ কিমির বেশি দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করে ২০১৭ সালের মে মাসে সেই রেকর্ড ভেঙে দেন কানাডার এক স্নাইপার (৩,৫৪০ মিটার )। ওই স্নাইপারের হানায় ইরাকে মৃত্যু হয় এক আইএস জঙ্গির।
দুটো হার্টবিটের মাঝের সময়টায় নাকি লক্ষ্যভেদ করতে হয় স্নাইপারদের। কারণ, হার্টবিটের সময় শুট করার সময় হাত সামান্য নড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্নাইপার ব্যবহার করলে যুদ্ধের খরচ অনেক কমে যায় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
লিউডমিলা পাভলিচেঙ্কোকে অন্যতম ভয়ঙ্কর মহিলা স্নাইপার। প্রায় ৩০৯ টি ‘কনফার্মড কিলিং’ রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
সাধারণত দু’জনের দল থাকে স্নাইপারদের। এক জনকে স্নাইপার এবং অপর জনকে বলা হয় স্পটার।
কতটা ক্ষতি হয়েছে লক্ষ্যবস্তুর, তা জানা বেশ কঠিন। বন্দুক চালানোর সময় এই নিঃশব্দ ঘাতকদের আশেপাশে কেউ থাকলেও তাঁরা শব্দটুকুও পাবেন না।
স্নাইপারদের মূল লক্ষ্য থাকে শত্রুপক্ষের উচ্চপদস্থ অফিসাররা। তাঁদের সরাতে পারলেই শত্রুপক্ষকে দুর্বল করে দেওয়া যাবে।
ফিনল্যান্ডের স্নাইপার সিমো হায়া। বিশ্বের অন্যতম সফল পুরুষ স্নাইপার। ১০০ দিনে শত্রুপক্ষের ৫০৫ জনকে মেরে ফেলার রেকর্ড ছিল তাঁর। তাইকা আমপুজা বা ম্যাজিক শুটার বলা হত তাঁকে।
মাইক প্লাম্ব নামের একজন সোয়াট স্নাইপার নিমেষের মধ্যে গুলি ছুড়ে এক ব্যক্তির হাত থেকে বন্দুক ফেলে দেন, আত্মহত্যার হাত থেকে রক্ষা করেন ওই ব্যক্তিকে। প্রায় ৭৪ মিটার দূরে ছিলেন ওই ব্যক্তি।
সবচেয়ে ভারি যে পোশাক স্নাইপাররা পরেন, তাকে বলা হয় ঘিলি শুট। আর এই ঘিলি শুট পরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন একই জায়গায় বসে থাকতে হয় স্নাইপারদের।
বাতাসের গতিবেগ, তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা প্রতি মুহূর্তে মাথায় রাখতে হয় স্নাইপারদের।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় দু’হাজার মহিলা স্নাইপার ছিল রুশ সেনাবাহিনীতে।