ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছে ইজ়রায়েলি সেনার হামলা। ছবি: রয়টার্স।
মঙ্গলবার গভীর রাতেও ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ পর পর কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইজ়রায়েলের দিকে ছুটে আসে। সঙ্গে সঙ্গে বাজতে শুরু করে সাইরেন। এক নাগাড়ে অন্তত ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। তার পর প্রায় ৪০ মিনিটের বিরতির পর ফের দ্বিতীয় হামলা শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপে মধ্য ইজ়রায়েল এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক লক্ষ্য করে অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
ইরানের সেনাবাহিনীর দাবি, ইজ়রায়েলের উপর তারা ‘হাইপারসোনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। যদিও সেই হামলা ইজ়রায়েলের কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। ইজ়রায়েলের তরফেও এই হামলা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
ষষ্ঠ দিনে পড়ল ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত। বুধবার ভোর (ভারতীয় সময়) থেকেই ইরানে হামলার তেজ বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল সেনা। তেহরানের কাছে তেল সংশোধনাগারে এ বার বোমাবর্ষণ শুরু করল তারা। ইরানের তেল সংশোধনাগার ধ্বংসের একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে।
ইরানের আইআরজিসি সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তারা ইজ়রায়েলের হার্জ়লিয়ায় গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ এবং ইজ়রায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলির দফতর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েলের পক্ষ থেকে এই দাবির প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
‘সাময়িক সংঘর্ষবিরতি নয়, এর শেষ দেখতে চাই!’ ইরান-ইজ়রায়েল পরিস্থিতি প্রসঙ্গে দেশে ফিরে এমনটাই বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার কানাডায় সাত দেশের বৈঠক শেষের আগেই তড়িঘড়ি দেশে ফিরে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতির জন্যই জি৭ সম্মেলনের সূচি সম্পূর্ণ না-করে ফিরতে হয়েছে ট্রাম্পকে। শুধু ট্রাম্পই নয়, আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োও মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটনে ফিরছেন বলে খবর। ইতিমধ্যে জি৭ বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন তিনিও।
এর আগে জি৭ সম্মেলনে ট্রাম্প নিজেও জানিয়েছিলেন, তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব ফিরে যেতে হবে ওয়াশিংটনে। তিনি বলেন, “আমাকে ফিরতে হবে। এটা খুবই জরুরি।” সেখানে তিনি কোনও কারণ ব্যাখ্যা করেননি। তবে সফরসূচি কাটছাঁটের খবর প্রকাশ্যে আসার কিছু সময় আগেই ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন। তেহরান থেকে সকলকে অন্যত্র সরে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। ট্রাম্প লেখেন, “আমি যে ‘চুক্তি’তে ইরানকে সই করতে বলেছিলাম, তা ইরানের করে নেওয়া উচিত ছিল। কী লজ্জার বিষয়, মানুষের জীবন কী ভাবে নষ্ট হচ্ছে! ইরান পরমাণু অস্ত্র রাখতে পারে না। আমি বার বার বলেছি!”
ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড (আইআরজিসি)-র সঙ্গে যুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেপাহ ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে সাইবার হানা! নিমেষে মুছে গেল সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি! মঙ্গলবার সকালে হ্যাকারের দল ‘প্রিডেটরি স্প্যারো’ (গঞ্জেশকে দারান্দে) সেপাহ-র ওয়েবসাইটে ওই হামলা চালিয়েছে। এর আগেও ইরানে একাধিক সাইবার হানা চালিয়েছিল এই দল। মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ওই দলটি দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সেপাহ ব্যাঙ্ককে ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক কর্মসূচি-সহ আইআরজিসি-র নানা কার্যক্রমের অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করা হত। সে কারণেই ওই সাইবার হানা চালানো হয়েছে। ‘প্রিডেটরি স্প্যারো’ লিখেছে, ‘‘যে সব প্রতিষ্ঠান স্বৈরাচারী শাসকের সন্ত্রাসবাদী কল্পনায় ইন্ধন জোগাবে, তাদের পরিণতি এ রকমই হবে!’’
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার রাত থেকে উত্তর-পূর্ব তেহরানের তিন জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ইরানের দূতাবাস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েলি হানায় ২২৪ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১২৫৭ জন। ইজ়রায়েলের এই আক্রমণ বন্ধ করতে রাষ্ট্রপুঞ্জকে হস্তক্ষেপ করারও আবেদন জানিয়েছে তারা।
ইরানের নতুন সেনাপ্রধান আলি শাদমানি। —ফাইল চিত্র।
রাতভর হামলায় নিহত হলেন ইরানের নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান আলি শাদমানি! মাত্র দিন তিনেক আগেই তাঁকে এই পদে নিযুক্ত করেছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। ইরান সেনাবাহিনী (রেভলিউশনারি গার্ড)-র কমান্ডার হোসেন সালামি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (চিফ অফ স্টাফ) মহম্মদ হোসেন বাগেরির মৃত্যুর পর শনিবারই শাদমানিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থেকে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়েছিল। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেনার ‘খতম আল-আম্বিয়া’ কেন্দ্রীয় সদর দফতরের নতুন প্রধান হিসাবে।
ইজ়রায়েলি সেনার গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, সোমবার রাতের হামলায় শাদমানির মৃত্যু হয়েছে। ইজ়রায়েলি সেনার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার গভীর রাতে তেহরানে ইরানের সেনার সদর দফতরে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা। তাতেই মৃত্যু হয়েছে সেনাপ্রধান শাদমানির। যদিও এ বিষয়ে ইরানের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
তেহরানে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের শহর ছেড়ে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানাল ইরানের ভারতীয় দূতাবাস। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তেহরানে বসবাসকারী অন্য ভারতীয়দেরও দ্রুত শহর ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আর্মেনিয়া সীমান্ত দিয়ে কিছু ভারতীয়কে ইরান থেকে নিরাপদে বার করে আনা হয়েছে। সব সময় সজাগ রয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সব রকম ভাবে সাহায্য করারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত শুরু হওয়ার পরেই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন অন্তত ১০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়ার পরিজন। কারণ, এত সংখ্যক পড়ুয়া ইরানের নানা শহরে রয়েছেন। সেই আবহে ওই পড়ুয়াদের নিরাপদে ভারতে ফেরত পাঠানোর জন্য তেহরানের কাছে আর্জি জানায় নয়াদিল্লি। প্রত্যুত্তরে ইরান জানায়, আকাশপথ বন্ধ থাকায় আপাতত বিমানে ভারতে যাওয়ার উপায় নেই। তবে স্থলবন্দর দিয়ে আজ়ারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান এবং আফগানিস্তান হয়ে ইরান ছাড়তে পারবেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। এর পরেই তেহরান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল ভারতীয় পড়ুয়াদের।
সোমবার কানাডায় জি-৭ শীর্ষবৈঠকে উপস্থিত দেশগুলির নেতারা একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে ঘোষণা করেছেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র বর্জন করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, পশ্চিম এশিয়ায় অবিলম্বে উত্তেজনা কমানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।
জি৭-এর সদস্য দেশগুলি (আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন)-এর ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘ইরান আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর। আমরা বার বারই এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, ইরানের কাছে কখনওই পারমাণবিক অস্ত্র থাকা উচিত নয়।’’ বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, “ইজ়রায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। ইজ়রায়েলের আত্মরক্ষার স্বার্থে আমরা তাদের সমর্থন করছি।”
ভারতীয়দের তেহরান ছাড়ার পরামর্শ দিল ইরানের ভারতীয় দূতাবাস। সামর্থ্য রয়েছে এমন অনাবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অবিলম্বে তেহরান ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শহর ছেড়ে নিরাপদে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ারও আর্জি জানিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস।
মঙ্গলবার পঞ্চম দিনে পড়ল ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষ। মঙ্গলবার সকালেও ইজ়রায়েলের বিভিন্ন জায়গায় সাইরেনের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ এখনও অব্যাহত। এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে তেহরানের ৮০টি জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। তাদের হামলায় ইরানে অন্তত ২২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম প্রায় ১২০০। এমনটাই জানিয়েছে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অন্য দিকে, সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতর থেকে পাওয়া শেষ তথ্য অনুযায়ী, ইজ়রায়েলে সোমবার পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম অন্তত ৫০০ জন। গত পাঁচ দিনে ইরানও ইজ়রায়েলের দিকে প্রায় ৩৭০ বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
জি-৭ সম্মেলনের জন্য সফরসূচি কাটছাঁট করে আগেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ মঙ্গলবার পঞ্চম দিনে পড়ল। দু’দেশের যুদ্ধের আবহে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতির জন্যই জি-৭ সম্মেলনের সূচি সম্পূর্ণ না-করে ফিরতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো মঙ্গলবার রাতেই ওয়াশিংটনে ফিরছেন বলে খবর। হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, পশ্চিম এশিয়ায় যা চলছে, সে কারণেই রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে নৈশভোজের পরে আমেরিকায় ফিরে আসবেন ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ইরানের সঙ্গে বৈঠকে বসার চেষ্টা করার জন্য আমেরিকার প্রশাসনিক আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইজ়রায়েলের উপর ইরানের প্রত্যাঘাতী হামলা সম্পূর্ণ ‘আত্মরক্ষা’র তাগিদে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে এমনটাই জানালেন ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সইদ ইরাভানি। ইরাভানি একটি চিঠিতে লিখেছেন, ইরানের উপর ইজ়রায়েলের আক্রমণে তৃতীয় কোনও দেশ যে কোনও ধরনের সহযোগিতা করলে তাদেরকেও এই সঙ্কটের আইনি দায়বদ্ধতা বহন করতে হবে।’’ সোমবার ইরাভানি বলেন, ‘‘মার্কিন অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য এবং রাজনৈতিক মদত ছাড়া এই আক্রমণ ঘটতে পারত না। এই বেআইনি কাজের জন্য আমেরিকাও দায়ী থাকবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইরান ইজ়রায়েলে আক্রমণ করেনি। ইরান কোনও যুদ্ধ শুরু করেনি। অস্তিত্বসঙ্কটের যে গল্প ওরা শোনাচ্ছে, তা মিথ্যা।’’
ইরানীয়দের সতর্ক করে তেহরান ছাড়তে বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে ইরানের বাসিন্দাদের রাজধানী ছেড়ে যাওয়ার সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি। যদিও এর কোনও কারণ ওই পোস্টে উল্লেখ করেননি ট্রাম্প। তিনি লেখেন, “আমি যে ‘চুক্তি’তে ইরানকে সই করতে বলেছিলাম, তা ইরানের করে নেওয়া উচিত ছিল। কী লজ্জার বিষয়, মানুষের জীবন কী ভাবে নষ্ট হচ্ছে! সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ইরানের পরমাণু অস্ত্র রাখার অধিকার নেই। আমি বার বার বলেছি!”