তথ্য চুরির দায় মানলেন। সে জন্য ফের ক্ষমাও চাইলেন মার্ক জ়াকারবার্গ। সেই এক সুর, চেনা গৎ। মঙ্গলবার রাতে তাতে চিঁড়ে ভিজল না ইউরোপীয় পার্লামেন্টে।
পাক্কা ৮০ মিনিটের বৈঠক শেষে বোঝা গেল, ফেসবুক কর্তার জবাবদিহিতে একেবারেই সন্তুষ্ট নয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বৈঠকের মাঝখানে গ্রিন পার্টির নেতা ফিলিপ ল্যামবার্টস যেমন বলেই দিলেন— ‘‘হ্যাঁ বা না-তে উত্তর দেওয়া যেত, এমন অন্তত ছ’টা প্রশ্ন করেছিলাম আপনাকে। কিন্তু একটারও উত্তর পেলাম না।’’ আর ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই পার্লামেন্টের এক সদস্য আজ বললেন, ‘‘গত ১০ বছরে একের পর এক ভুল করে অন্তত ১৫-১৬ বার ক্ষমা চেয়েছেন উনি। কী লাভ এতে?’’
পূর্ণাঙ্গ কমিটির বৈঠক না হলেও জ়াকারবার্গকে বিঁধতে পার্লামেন্টে হাজির ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক এবং নাগরিক অধিকার কর্মীদের এক বিরাট প্রতিনিধিদল। প্রত্যেককে তিন মিনিট করে সময় দেওয়া হয়েছিল। সব প্রশ্ন শেষ হওয়ার পরেই কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন জ়াকারবার্গ। তাই এ বারও সহজে পার পেয়ে গেলেন বলে মনে করছেন অনেকে। আর ‘দিন কয়েকের মধ্যেই সব প্রশ্নের লিখিত জবাব দেব’ বলে মাঠ ছাড়লেন ফেসবুক কর্তা।
মার্কিন কংগ্রেসে যা বলেছিলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এসেও এক কথা আওড়ালেন। ‘‘গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে আমাদের যতটা দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল, আমরা সেটা পারিনি।’’ তাই তাঁর তরফে লিখিত জবাব না-পাওয়া গে়লে আগামী দিনে আরও কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন ইইউ নেতারা। দিন কয়েকের মধ্যেই তথ্য সুরক্ষায় নতুন আইন আনছে ইইউ। কিন্তু ফেসবুক সে জন্য কী করছে?
এর উত্তরে জ়াকারবার্গ বলেন, ‘‘ব্যবসায় লাভ দ্বিগুণ করার থেকেও এ দিকেই আমাদের নজর থাকবে সব চেয়ে বেশি।’’
ফেসবুকের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নিধনের মতো কাণ্ডে আড়ালে থেকে হিংসা ছড়ানোর মতো মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। যার কারণ হিসেবে ইইউ নেতারা এ দিন প্রশ্ন তোলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুকের ‘একচ্ছত্র’ আধিপত্য নিয়েও। ফেসবুক কর্তা অবশ্য দাবি করেন, তাঁদেরও প্রতিযোগী রয়েছে। তবে ভুয়ো খবর বা হিংসা ছড়ানোর মতো তথ্য-ছবি আটকাতে ফেসবুক ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করছে, জানান জ়াকারবার্গ।