তেরো বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল গত জুলাই মাসে। এখনও পর্যন্ত দোষীরা তো ধরা পড়েইনি, উল্টে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের আড়াল করার। আর এ নিয়ে প্রতিবাদে মুখর নেপাল। ভারতে যখন #মিটু আন্দোলনের জেরে বিদেশ প্রতিমন্ত্রীকে পর্যন্ত ইস্তফা দিতে হয়েছে, সেখানে আদ্যন্ত রক্ষণশীল এই প্রতিবেশী দেশে যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে বলে মনে করছেন সমাজকর্মীরা।
নির্মলা পান্ত নামে এক কিশোরীর ধর্ষণ আর খুনে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে প্রথম পথে নামে নেপাল। রেজ এগেন্স্ট রেপ আর জাস্টিস ফর নির্মলা হ্যাশট্যাগ দিয়ে সোশাল মিডিয়াতেও চলছে সমান্তরাল আন্দোলন। হিমা বিস্তা নামে এক নারী অধিকার রক্ষা কর্মী অবশ্য জানাচ্ছেন, ভারতের মতো #মিটু আন্দোলন এখনও ছড়িয়ে পড়েনি এ দেশে। গোঁড়া গ্রামীণ এলাকায় যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ খোলা তো আরও কঠিন বিষয়। তাঁর কথায়, ‘‘এই সমাজেও মিটু বলার মতো সাহসিনীরা থাকলে আমি খুশিই হব।’’
তবে হিমা যা-ই বলুন না কেন, যৌন হেনস্থা নিয়ে ধীরে ধীরে হলেও মুখ খুলতে শুরু করেছেন নেপালি মহিলারা। গত দু’সপ্তাহে অনেকেই কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ খুলেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কাঠমান্ডুর প্রাক্তন মেয়র কেশব স্থাপিত। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন দু’জন মহিলা। রসমিলা প্রজাপতি নামে এক মহিলা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‘স্থাপিতের যৌন প্রস্তাবে রাজি হইনি বলে ১৫ বছর আগে আমায় চাকরি খোয়াতে হয়েছিল।’’ অভিযু্ক্ত প্রাক্তন মেয়র অবশ্য সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আগেই খারিজ করে দিয়েছেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মোহনা আনসারিও অবশ্য মনে করছেন প্রতিবাদী নেপালি মেয়েদের জন্য রাস্তা ততটাও মসৃণ নয়। তিনি জানালেন, দুই ধর্ষিতার হয়ে লড়ছেন তিনি। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় কার্যত পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে ওই দুই নির্যাতিতাকে।