Muhammad Yunus on Sheikh Hasina

‘ভারতে থাকলেও হাসিনার বিচার হবে’, দিল্লি প্রত্যর্পণ না করলে কী পদক্ষেপ, জানিয়ে দিলেন মুহাম্মদ ইউনূস

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে দু’টি গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। ইউনূস জানান, আদালতের সম্মুখীন তাঁকে হতেই হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৮
Share:

(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। (ডান দিকে) —ফাইল ছবি।

প্রয়োজনে ভারতে থাকাকালীনই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, মানবতার বিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। আদালতের সম্মুখীন তাঁকে হতেই হবে। কিন্তু হাসিনা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে ইতিমধ্যে ভারত সরকারকে একটি ‘নিয়মমাফিক চিঠি’ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই চিঠির কোনও উত্তর দেয়নি।

Advertisement

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ়কে বুধবার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইউনূস। সেখানে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, হাসিনার বিষয়ে ঢাকার অবস্থান কী? ইউনূস বলেন, ‘‘বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে। শুধু ওঁর (হাসিনার) বিরুদ্ধেই নয়। ওঁর সঙ্গে আরও যাঁরা যাঁরা যুক্ত ছিলেন, ওঁর পরিবারের সদস্যেরা, ওঁর ঘনিষ্ঠেরা, সকলকেই বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।’’ ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে একাধিক অপরাধের জন্য হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দু’টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর সশরীরে উপস্থিতির জন্য বিচারপ্রক্রিয়া আটকে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘‘হাসিনা বাংলাদেশে থাকুন বা না থাকুন, উনি ভারতে থাকা অবস্থাতেও আমরা বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারি।’’

হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর আমলে বহু মানুষকে গুম করে দিতেন। বিনা বিচারে তাঁদের দিনের পর দিন আটকে রাখতেন। এমনকি, কিছু বন্দিকে খুনও করা হত। আচমকা তাঁরা উধাও হয়ে যেতেন। আর তাঁদের খোঁজ পাওয়া যেত না। হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘আয়নাঘর’ নামের এমন একটি গোপন বন্দিশালার কথা প্রকাশ্যে আসে। বহু বন্দিকে সেখান থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেখানে কী ধরনের অত্যাচারের সম্মুখীন তাঁরা হয়েছেন, তা-ও জানিয়েছেন বন্দিরাই। কিছু দিন আগে এই বন্দিশালা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ইউনূস। তাঁর কথায়, ‘‘এর চেয়ে খারাপ কিছু আর হয় না। কত জন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই সংখ্যা বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে। পূর্বতন সরকারে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই অপরাধের সঙ্গে জুড়ে ছিলেন। কারা ইচ্ছা করে এই কাজ করছিলেন, কারা উপরমহলের নির্দেশে অপরাধ করতে বাধ্য হচ্ছিলেন, তা দেখতে হবে।’’

Advertisement

বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটা বা সংরক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তার চাপেই গত ৫ অগস্ট হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। অভিযোগ, আন্দোলন দমনের জন্য হাসিনা সরকার বহু মানুষকে বন্দি করেছে, হত্যা করেছে। একে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করে তাঁর বিরুদ্ধে বিচার শুরু করতে চায় ইউনূসের সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement