প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। এক-দেড় মাসের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে। জানালেন বাংলাদেশের সরকারি আইনজীবী তথা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মহম্মদ তাজুল হোসেন। শনিবার বিকেলে ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। জানান, ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে বাংলাদেশের যে চুক্তি রয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দেন তিনি।
তাজুল বলেন, ‘‘হাসিনা-সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আমরা মার্চ মাসের মধ্যেই হাতে পেয়ে যাব বলে আশা করছি। যদি আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই প্রতিবেদন পেয়ে যাই, এক-দেড় মাসের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে। কত দিন ধরে তা চলবে, এখনই বলা সম্ভব নয়। নথির পরিমাণ, সাক্ষীদের বয়ান বিচার করে আদালত সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের দিক থেকে যত দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়ার কাজ এগোনো যায়, সেই চেষ্টা করব। ট্রাইব্যুনালের বিচার কোনও বিরতি ছাড়াই চলবে।’’
আরও পড়ুন:
হাসিনার বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে তাড়াহুড়ো করছে না বাংলাদেশ, জানান তাজুল। তবে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষাও যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করা হবে। তাজুল বলেন, ‘‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারই তা স্বাক্ষর করেছিল। আশা করছি, এই চুক্তির শর্ত মেনেই ভারত হাসিনাকে ফিরিয়ে দেবে।’’ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তাজুল আরও বলেন, ‘‘এটি কোনও সাধারণ খুনের ঘটনা নয়। এগুলি মানবতাবিরোধী অপরাধ। যার বিস্তৃতি ৫৬ হাজার বর্গমাইল। দু’হাজারের বেশি মানুষ এতে শহিদ হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। আমরা দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর চেষ্টা করছি।’’
উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট গণবিক্ষোভের চাপে পড়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি ভারতে চলে আসেন। সেই থেকে ভারতেই আছেন। তাঁকে ফেরত চেয়ে নয়াদিল্লিকে চিঠিও দিয়েছে ঢাকা। সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করলেও ভারত এখনও তার জবাব দেয়নি। হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে একাধিক অশান্তির খবর মিলেছে। অভিযোগ, সেখানে সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত। ভেঙে ফেলা হয়েছে মুজিবুর রহমানের ৩২ ধানমন্ডির বাড়ির একাংশ। ভারত তা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।