ডোনাল্ড ট্রাম্প
দু’জনের চুলোচুলি নতুন কিছু নয়। কিছু দিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘পাগলা বুড়ো’ বলে সম্বোধন করেছিলেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। পাল্টা বলতে ছাড়েননি ট্রাম্পও। বলেছিলেন, ‘‘আমি কি ওঁকে বেঁটেমোটা বলেছি?’’
এ বার সেই ঝগড়ায় নয়া মোড়। কিছু দিন আগেই কিম ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর কাছে দারুণ শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্র আছে। ট্রাম্প গত কাল হুঙ্কার ছেড়েছেন, তাঁর অস্ত্রটা আরও বেশি শক্তিশালী।
আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হওয়ার পর থেকেই কিম বলে যাচ্ছিলেন, উত্তর কোরিয়াকে বিশ্বের সব চেয়ে শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্রধর দেশ বানাবেন তিনি। সম্প্রতি হুঙ্কার দেন, তাঁর অফিসের টেবিলে ‘নিউক্লিয়ার বাটন’ রয়েছে। একটা বোতাম টিপে গোটা আমেরিকা উড়িয়ে দিতে পারেন তিনি। নতুন বছরে এর জবাব দিলেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার টুইট করলেন, ‘‘কিম বলেছিলেন যে সব সময় ওঁর ডেস্কে পরমাণু অস্ত্র উৎক্ষেপণের বোতাম থাকে। ওঁর খাদ্যাভাবে ভুগতে থাকা রাজত্বের কেউ দয়া করে ওঁকে জানিয়ে দেবেন, আমারও এমন পরমাণু বোতাম আছে। ওঁর থেকে অনেক বড়, আরও বেশি শক্তিশালী। আর সেটা কাজও করে!’’
দুই শাসকের এ হেন বাগযুদ্ধকে অনেকেই স্রেফ ‘ছেলেমানুষি’ বলে হাসাহাসি করছেন। কেউ কেউ এমনও বলছেন, ‘‘প্রথম শ্রেণির বাচ্চারা খেলার মাঠে এ ভাবে ঝগড়া করে।’’ তবে পরমাণু-যুদ্ধের ভয়ও পাচ্ছেন অনেকে। মার্কিন আইনসভার সদস্য জিম হাইমস যেমন বলেছেন, ‘‘শক্তি প্রদর্শন ছাড়া এটা আর কী!’’ তবে এখনই ভয় পাওয়ার মতো কিছু হয়নি বলে জানাচ্ছেন কূটনীতিকরা। তাঁদের আশ্বাস, ট্রাম্পের টেবিলে এমন কোনও বোতামই নেই। তা ছাড়া, পরমাণু হামলা বিষয়টি খুবই জটিল ও গোপনীয়। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের দায়ভার থাকে সেনার উপরে। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে যদি পরমাণু হামলা ঘোষণা করতে হয়, তাঁকেও সেনাবাহিনীর অংশ হতে হয়। সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টকে পেন্টাগনের কাছে নিজের বিশেষ ‘সামরিক-সঙ্কেত’ জানাতে হবে। সেটি রাখা থাকে একটি বিশেষ কার্ডে, যাকে সেনার ভাষায় ‘বিস্কিট’ বলে। প্রেসিডেন্ট সব সময়ে সেটি নিজের কাছে রাখেন। প্রেসিডেন্ট পেন্টাগনকে নির্দেশ দিলে তার পর তা কার্যকর করা হয়।
মঙ্গলবার দিনের শুরুতে ট্রাম্পের কথায় অনেকের মনে হয়েছিল, ফের উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় জোর দিতে চাইছেন তিনি। কিন্তু প্রেসিডেন্টের টুইটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সে সম্ভাবনা এখন বিশ বাঁও জলে। পরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মার্কিন দূত নিকি হ্যালিও জানিয়ে দেন, উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ না করা পর্যন্ত কোনও কথা নয়।