শুভাংশু শুক্ল (বাঁ দিকে)-সহ চার মহাকাশযাত্রী। — ফাইল চিত্র।
এর আগে সাত বার পিছিয়ে গিয়েছে শুভাংশু শুক্লর মহাকাশযাত্রা। গত রবিবার শুভাংশুদের নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল নাসার ‘ড্রাগন’-এর। কিন্তু উৎক্ষেপণের দিন দুয়েক আগে আবারও বাতিল করে দেওয়া হয় অভিযান। শেষমেশ নাসা জানাল, সব ঠিক থাকলে বুধবার মহাকাশে পাড়ি দেবেন শুভাংশুরা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার দুপুরে অভিযান হতে পারে।
নাসার ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ অভিযানে কমান্ডার হিসাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাসার প্রাক্তন নভশ্চর তথা অ্যাক্সিয়ম স্পেসের মানব মহাকাশযানের ডিরেক্টর রেগি হুইটসন। আর পাইলটের ভূমিকায় রয়েছেন লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু। শুভাংশু ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। রাকেশ শর্মার চার দশক পরে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবার নাসা জানিয়েছে, ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ শুভাংশুদের নিয়ে উড়ান দিতে পারে মহাকাশযান। আমেরিকার ফ্লরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারের ৩৯এ লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটের সাহায্যে ‘ড্রাগন’কে মহাকাশে পাঠানো হবে। সব ঠিক থাকলে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আইএসএস-এ পৌঁছোবেন শুভাংশুরা।
এর আগে একাধিক বার অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযান পিছিয়ে গিয়েছে। কেন অভিযান পিছিয়েছে, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে নাসা। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের এভেজ়দা সার্ভিস মডিউলে মেরামতি হয়েছে সদ্য। ফলে সব আগের মতো ঠিকঠাক চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দরকার ছিল নাসার বিজ্ঞানীদের। প্রথমে ২০২৫ সালের ২৯ মে শুভাংশুদের অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে ৮ জুন করা হয়। খারাপ আবহাওয়া এবং ‘ড্রাগন’-এ ইলেক্ট্রিক্যাল হারনেসের সমস্যার কারণে সে বার অভিযান বাতিল করতে হয়। পর দিন, অর্থাৎ ৯ জুন অভিযানের দিন ঠিক করা হয়। সে দিনও ফ্যালকন-৯ রকেটের প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় পিছিয়ে গিয়েছিল অভিযান। খারাপ আবহাওয়া এবং প্রযুক্তিগত গোলযোগের কারণে ১০ জুনও অভিযান হয়নি। মহাকাশযানের ‘ফায়ার বুস্টার’ পরিদর্শনের সময় দেখা যায়, ‘এলওএক্স’ (তরল অক্সিজেন) লিক করছে। সে কারণে ফের পিছিয়ে যায় মহাকাশযাত্রা। শেষমেশ বুধবার সেই অভিযান হতে পারে। সেই আশাতেই রয়েছে গোটা বিশ্ব।
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কারণ, এই অভিযানেই প্রথম বার উড়তে চলেছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস-এক্সের ‘ড্রাগন’। চার সদস্যের এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন শুভাংশু। তিনিই মহাকাশযানটি পরিচালনা করবেন। বায়ুসেনার ক্যাপ্টেন হওয়ায় এর আগে এএন-৩২, জাগুয়ার, হক, মিগ-২১, সু-৩০-সহ নানা ধরনের যুদ্ধবিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে শুভাংশুর। কিন্তু মহাকাশযান এই প্রথম! এ জন্য দীর্ঘ দিন ধরে স্পেসএক্স এবং ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশন’-এর কাছে প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে তাঁকে। ১৪ দিন ধরে শুভাংশুরা আইএসএস-এ থাকবেন, বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন। নাসা এবং ইসরোর যৌথ উদ্যোগে দলটি এই কাজ করবে।